
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এমন অন্তিম যাত্রা শেষ বার নয়াদিল্লি দেখেছিল সাতাশ বছর আগে। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর।
শুক্রবার আবেগের স্রোত বয়ে গেল রাজধানীর বুক চিরে! প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে নয়াদিল্লির রাস্তায় ঢল নামল মানুষের– কৃষ্ণমেনন মার্গে বাজপেয়ীর সরকারি বাসভবন থেকে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপি-র সদর দফতর, তার পর সেখান থেকে বাহাদুর শাহ জাফর মার্গ হয়ে রাজঘাটের কাছে স্মৃতি স্থল। শুধু বিজেপি, কর্মী সমর্থক নন, সে ভিড়ে মিলে মিশে সাধারণ মানুষ। রাজনীতির রঙ বরং ফিকে হয়ে গিয়েছে।

নতুন দিল্লি থেকে পুরনো দিল্লির এই পথে প্রথম জীবনে বাজপেয়ী নিজে কত পায়ে হেঁটে ঘুরেছেন ইয়ত্তা নেই। প্রথম জীবনে যে সংবাদপত্রে সাংবাদিকতা করতেন তিনি, তাঁর দফতরও ছিল এই বাহাদুর শাহ জাফর মার্গেই। শ্রাবণ পেরিয়ে গেলেও দিল্লির আবহাওয়ায় এখনও আর্দ্রতা এমনিতেই বেশ। বাজপেয়ীকে ঘিরে পুরনো স্মৃতি, আবেগ, জাতীয়তাবোধ ও তাঁর কবিতায় এ দিন আরও যেন আর্দ্র হয়ে গেল রাজধানীর পরিবেশ।

বিজেপি সদর দফতর থেকে স্মৃতি স্থল পর্যন্ত অন্তিম যাত্রায় পা মেলালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য ও বিভিন্ন রাজ্যে দলের মুখ্যমন্ত্রীরাও। শেষ যাত্রায় উপস্থিত না থাকলেও শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকবেন দলমত নির্বিশেষে জাতীয় রাজনীতির কুশীলবরা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো শেষ কৃত্যে উপস্থিত থাকবেন না। দলের তরফে স্মৃতি স্থলে উপস্থিত থাকার কথা তৃণমূলের দুই সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় ও দীনেশ ত্রিবেদীর।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই বাজপেয়ীর বাসভবনে গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লালকৃষ্ণ আডবাণী, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। কিন্তু সাধারণ মানুষ প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দেখা পাননি। শুক্রবার সকালে বাজপেয়ীর মরদেহ রাখা হয় কৃষ্ণমেনন মার্গের মঞ্চে। কাক ভোর থেকে লাইন দিয়ে অপেক্ষায় থাকা মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জানান।

একই ভাবে ভিড় ছিল দীনদয়াল মার্গেও। দলের সদর দফতরে বাজপেয়ীর মরদেহ প্রায় তিন ঘণ্টা শায়িত রাখা হয়। সেখানে দলের কর্মী সমর্থকরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। তার পরই শুরু হয় শেষ যাত্রা।
রাজঘাটের কাছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, লালবাহাদুর শাস্ত্রীর সমাধিস্থল রয়েছে। বাজপেয়ীর সমাধিস্থলের নাম রাখা হয়েছে রাষ্ট্রীয় স্মৃতি সমাধি। সেখানেই শেষ কৃত্য সম্পন্ন হবে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর। সম্ভবত তাঁর মুখাগ্নি করবেন মেয়ে বা জামাই রঞ্জন ভট্টাচার্য।