
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশের সবচেয়ে কনিষ্ঠ অঙ্গদাতা হিসেবে মেডিক্যাল ইতিহাসে দৃষ্টান্ত গড়ে তুলল ২০ মাসের এক শিশু। তার অঙ্গে প্রাণ বেঁচেছে আরও তিন জন।
জানা গেছেস দিল্লির রোহিনী এলাকার এক দম্পতি তাঁদের একরত্তি সন্তান ধনিষ্ঠাকে নিয়ে শ্রী গঙ্গারাম হাসপাতালে ছুটে আসেন, একটি মারাত্মক দুর্ঘটনার পরে। দোতলার বারান্দা থেকে খেলতে খেলতে নীচে পড়ে যায় সে। জানুয়ারি মাসের আট তারিখের এই মারাত্মক দুর্ঘটনায়, তিন দিন পরে বাচ্চাটির মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ডাক্তাররা। এর পরেই তার অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হয় অন্য শিশুদের শরীরে।
ধনিষ্ঠার বাবা আশিস কুমার বলেন, “ডাক্তাররা বললেন, ওর ব্রেন ডেথ হয়েছে। ও আর কখনও জ্ঞানে ফিরবে না বলে জানিয়ে দেন ওঁরা। অথচ আমাদের মেয়েটার শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিক মতো কাজ করছিল। এই অবস্থায় আমাদের ওর অঙ্গদানের কথা বলেন ডাক্তাররা। আমরা কয়েক জন মা-বাবার সঙ্গে দেখাও করি, যাঁদের বাচ্চারা অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় আছে। সব জানার পরে মনস্থির করি আমরা, রাজি হয়ে যাই অঙ্গ দিতে। মেয়ে তো আর ফিরবে না, শরীরটা তো সেই মাটিতে পুঁতেই দিতাম, তার চেয়ে প্রাণে বাঁচুক অন্য বাচ্চারা। ওদের মধ্যেই বেঁচে থাকুক আমাদের সন্তান।”
শ্রী গঙ্গারাম হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডক্টর ডিএস রানা বলেন, “এই পরিবার একটি ইতিহাস গড়েছেন। ওঁদের জন্য প্রশংসার কোনও ভাষাই যথেষ্ট নয়। এ দেশে অঙ্গদানের পরিসংখ্যান খুব কম। প্রতি বছর এদেশে পাঁচ লক্ষ মানুষ মারা যান অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অভাবে। অঙ্গদান করতে যাঁরা সক্ষম হন, তাঁদের মধ্যে ২০ শতাংশ পরিবার কেবল রাজি হয় অঙ্গ দিতে। এরকম পরিস্থিতিতে ধনিষ্ঠার বাবা-মায়ের এই কাজটি আরও পাঁচ জনের সামনে উদাহরণ তৈরি করেছে।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ধনিষ্ঠার কিডনি দুটি প্রতিস্থাপিত হয়েছে এক যুবকের শরীরে। হার্ট এবং লিভার পেয়ে প্রাণে বেঁচেছে দু’টি শিশু। কর্নিয়া দুটি সংরক্ষণ করা হয়েছে আইব্যাঙ্কে। প্রতিস্থাপনের পরে বাকিরা ভাল আছে বলেই জানিয়েছেন ডাক্তাররা।