
ছড়ানো ধানে প্রতিদিন ময়ূরদের নেমন্তন্ন রাজগঞ্জের ললিতাবাড়িতে
লোপামুদ্রা সান্যাল, জলপাইগুড়ি : ঝাঁকে ঝাঁকে ময়ূর এসে খেয়ে নিচ্ছে খেতের ধান। কিন্তু তাড়ানো তো দূরের কথা, উল্টে ধান ছড়িয়ে তাদের ডেকে আনছেন গ্রামবাসীরা। তাই সকাল সকাল ব্রেকফাস্ট আর বেলা পড়লে টিফিন সারতে এ গ্রামে ঢল নামছে ময়ূরদের। এই অপরূপ দৃশ্য দেখতে রাজগঞ্জের ললিতাবাড়ি গ্রামে পর্যটকদের নেমন্তন্ন করছেন বাসিন্দারা।
কোনও খেতে এখনও ধান রয়েছে। কোথাও আবার কেটে নেওয়া হয়েছে পাকা ধানের পুরোটাই। জমিতে ইতিউতি ছড়িয়ে রয়েছে ঝড়তি পড়তি কিছু। ভোরের আলো ফুটলে সেখানেই নামছে ময়ূরের ঝাঁক। ঘড়ির কাঁটা সাতটা টপকালে নাকি আস্তে আস্তে ফিকে হয়ে যায় ভিড়। ফের বিকেল ৩টে থেকে দেখা যায় ময়ূরের ঝাঁক। এক একটি দলে থাকে ৩০- ৪০ টি করে ময়ুরের দল। এই রকম গোটা পাঁচেক দল ঘুরে বেড়ায় গোটা এলাকায়।
বৈকন্ঠপুরের জঙ্গল লাগোয়া গ্রাম ললিতাবাড়ি। কয়েকশো পরিবারের বাস এখানে। ধান ও পাট চাষই এই অঞ্চলের মানুষের মূল জীবিকা।
এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন রায় বলেন, “আগে এতো পরিমাণে ময়ূর আসতো না। এই বছর থেকে বেড়েছে সংখ্যাটা। ময়ূর দেবতার বাহন। তাই ধান খেতে এলে তাদের না তাড়িয়ে উল্টে মুঠো ভরে ধান ছিটিয়ে দেন গ্রামবাসীরা।” এখানেই শেষ নয়, চোরা শিকারীরা যাতে ফাঁদ পেতে তাদের না ধরে সেই দিকেও কড়া নজর রয়েছে গ্রামবাসীদের।
বৈকুণ্ঠপুরের রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত বলেন, “জঙ্গলের ঘনত্ব এখন বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ময়ূর, বুনো শুকর, হাতি। আমরা অবশ্যই নজরদারি চালাই। কিন্তু ললিতাবাড়ির মানুষরা রীতিমতো নজির গড়েছেন। দুবেলা খেতে দিচ্ছেন তাদের। তবে আমরা ধান ছাড়া আর কিছু দেওয়ার অনুমতি দেইনি।”