
দ্য ওয়াল ব্যুরো : সোমবার রাতে মথুরায় গ্রেফতার হন বিতর্কিত পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার চার সদস্য। তাঁরা দিল্লি থেকে হাথরাসের দিকে যাচ্ছিলেন। চলতি বছরের শুরুতে উত্তরপ্রদেশে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভের জন্য এই সংগঠনটিকেই দায়ী করে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করতে চাওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত চার ব্যক্তির নাম আতিকুর রহমান, সিদ্দিকি, মাসুদ আহমেদ এবং আলম। সোমবার সন্ধ্যায় একটি সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, কয়েকজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি হাথরাসের দিকে যাচ্ছেন। পরে রাস্তায় একটি টোল প্লাজা থেকে তাঁদের আটক করা হয়। তাঁদের কাছে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও কয়েকটি পুস্তিকা পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুস্তিকাগুলি শান্তিভঙ্গ করতে পারে। আইনশৃঙ্খলার সমস্যা তৈরি করতে পারে। জেরায় চার ব্যক্তি স্বীকার করেন, তাঁদের সঙ্গে পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া এবং তার সহযোগী সংগঠন ক্যামপাস ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার সম্পর্ক আছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে এক দলিত তরুণীকে চার উচ্চবর্ণের ব্যক্তি ধর্ষণ করে। ধর্ষিতার পরিবারের দাবি, তাঁরা দলিত হওয়ার জন্যই পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি করেছিল। গণধর্ষণের পরে তরুণীর ওপরে বীভৎস অত্যাচার করে অপরাধীরা। তাঁর শরীরে নানা জায়গায় হাড় ভেঙে যায়। সারা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়। ঘাড়ে গভীর ক্ষত থাকার জন্য তাঁর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। পুলিশ জানায়, তরুণীর জিভেও ক্ষত ছিল। চার অপরাধী যখন তাঁকে গলা টিপে মারার চেষ্টা করছিল, তখন তিনি নিজের জিভ কামড়ে ফেলেন।
অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জোর করে তাঁর দেহ আত্মীয়দের থেকে কেড়ে নিয়ে যায়। পরিবারকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়। কয়েকজন পুলিশকর্মী মিলে রাত আড়াইটেয় তরুণীর দেহ পুড়িয়ে দেন।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছিলেন, যারা রাজ্যের উন্নতি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে, তারাই হাথরাসের ঘটনা নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাথরাস নিয়ে রাজ্য জুড়ে ১৯ টি মামলা দায়ের করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তার মধ্যে দেশদ্রোহিতা, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় মিথ্যা প্রচার করা, রাজ্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, প্রশাসনের সম্মানহানি ইত্যাদি অভিযোগ আছে।
পুলিশ যেভাবে এফআইআর করেছে, তাতে স্পষ্ট, হাথরাসের ঘটনাকে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে ধরা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মৃত তরুণীর বাড়িতে বেশ কয়েকজন বিরোধী নেতা গিয়েছিলেন। পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে অতিমহামারীর সময় সামাজিক দূরত্ব না মানার অভিযোগে মামলা করেছে।