
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমহার্স্ট স্ট্রিটে কোভিড রোগীর দেহ দু’দিন ধরে পড়ে থাকার ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, এবার একই কাণ্ড উত্তর কলকাতার গৌরীবাড়িতে। আবারও করোনা সংক্রামিত মৃতদেহ পড়ে রইল ১৬ ঘণ্টা। অভিযোগের তির সরকারি হাসপাতাল ও পুলিশের দিকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৫৭ বছর বয়সি ওই ব্যক্তির বাড়ি আসলে সিঙ্গুরে। তবে গৌরীবাড়ির একটি মিষ্টির দোকান ছিল তাঁর। সেখানেই থাকতেন তিনি। অন্য কর্মচারীরাও থাকতেন দোকানের ভিতরেই। সপ্তাহখানেক আগে সিঙ্গুরের ওই মালিক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানা যায়। করোনার উপসর্গও দেখা যায়। সোমবার, ২৯ জুন বেসরকারি ল্যাব থেকে করোনা পরীক্ষা করানো হয় তাঁর। এর পরে বুধবার বিকেল থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
কর্মচারীরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত মালিককে বুধবার মেডিক্যাল কলেজ কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কর্মচারীদের দাবি, মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা ডেথ সার্টিফিকেট দিতে চাননি। এর মধ্যে সিঙ্গুর থেকে চলে আসে মৃতের ভাইও। তিনিও জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা জানান, ‘মৃতের করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট আসেনি। তাই ডেথ সার্টিফিকেট দিতে গেলে, ময়নাতদন্ত করতে হবে। তার থেকে স্থানীয় যে চিকিৎসককে দেখিয়েছেন, তাঁর কাছে নিয়ে যান।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এর পরে তাঁরা ওই ব্যক্তির মৃতদেহ নিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন। হাসপাতালের কথা মতো যোগাযোগ করেন কিন্তু স্থানীয় চিকিৎসকের সঙ্গেই। কিন্তু তিনি বলেন, করোনা রিপোর্ট আসার আগে তিনি ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারবেন না।
এর পরে পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানানো হয়। অভিযোগ, পুলিশও পরামর্শ দেয় রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। আর এই টানাপড়েনের মধ্যে মিষ্টির দোকানের মধ্যেই পড়ে থাকে বৃদ্ধের মৃতদেহ।
শেষমেশ আজ, বৃহস্পতিবার সকালে সেই করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এলে দেখা যায়, তা পজিটিভ। অর্থাৎ মৃত ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। এর পরে দুপুর ১২টা নাগাদ স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা এসে মৃতদেহ নিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে পেরিয়ে গেছে প্রায় ১৬ ঘণ্টা। এলাকাজুড়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক ও ক্ষোভ।
মৃত ব্যক্তির দেহ সরানোর পর মিষ্টির দোকানটি জীবাণুমুক্ত করা হয়। দোকানের অন্য কর্মচারীদেরও কোয়ারেন্টিনে রাখা হয় নিয়ম মেনে।