
দ্য ওয়াল ব্যুরো : মঙ্গলবার দিল্লিতে ট্র্যাক্টর মিছিলের সময় একদল লোক ঢুকে পড়ে ঐতিহাসিক লালকেল্লায়। সেখানে তারা শিখ ধর্মের পতাকা ‘নিশান সাহিব’ উড়িয়ে দেয়। ওই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে পাঞ্জাবের অভিনেতা দীপ সিধুর। একসময়কার বলিউডি অভিনেতা তথা বর্তমানে বিজেপির সাংসদ সানি দেওলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন দীপ। লালকেল্লার ঘটনায় তাঁর কী ভূমিকা ছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
লালকেল্লায় মিছিলের একাংশের ঢুকে পড়া নিয়ে নানা মহলে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিক্ষোভকারীরা কীভাবে লাঠিসোঁটা নিয়ে ঐতিহাসিক লালকেল্লায় ঢুকে পড়ছে, সেই ছবি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফেসবুকে পোস্ট করে দীপ সিধু বলেন, তাঁরা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেননি। প্রতীকী প্রতিবাদ হিসাবে ‘নিশান ই সাহিব’ পতাকা লাগিয়েছিলেন।
তাঁর কথায়, “আমরা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানানোর জন্য নিশান সাহিব ও কৃষক সংগঠনের পতাকা লাগিয়েছিলাম। জাতীয় পতাকার অবমাননা করিনি। আমরা কিষাণ-মজদুর একতা নিয়ে স্লোগানও দিয়েছিলাম।”
লালকেল্লার ঘটনার সমর্থনে দীপ সিধু বলেন, গণ আন্দোলনে ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ দেখা যেতেই পারে। যখন মানুষের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, তখন সে রাগবেই।

অভিনেতার দাবি, বিক্ষোভকারীরা কোনও সম্পত্তির ক্ষতি করেননি। তাঁর কথায়, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছি।”
গত ডিসেম্বরেই সাংসদ সানি দেওল বিবৃতি দিয়ে বলেন, দীপ সিধুর সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। মঙ্গলবার আরও একটি বিবৃতি দিয়ে সানি বলেন, ‘আজ লালকেল্লায় যা ঘটেছে, তাতে আমি দুঃখ পেয়েছি। আমি এর আগেও জানিয়েছিলাম, আমার বা আমার পরিবারের কারও সঙ্গে দীপ সিধুর সম্পর্ক নেই।’
কৃষক নেতাদের একাংশ লালকেল্লার ঘটনার জন্য দীপ সিধুকে দায়ী করেছেন। এক কৃষক নেতা বলেন, “দীপ সিধু সরকারের লোক। এই ষড়যন্ত্রটা আমাদের বোঝা দরকার।” পরে তিনি বলেন, “দীপ সিধু সর্দার নয় গদ্দার।”
সোমবারই দিল্লি পুলিশের প্রধান এস এন শ্রীবাস্তব বলেছিলেন, দেশবিরোধী শক্তি কৃষকদের উস্কানি দিচ্ছে। তারা কৃষক মিছিলের সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠতে চায়। অন্যদিকে গত শুক্রবার সিংঘু বর্ডারে কৃষকরা এক যুবককে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাঁদের অভিযোগ, মিছিলে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য পুলিশই প্রশিক্ষণ দিয়ে ছেলেটিকে পাঠিয়েছিল।
গত রবিবার দিল্লি পুলিশ কৃষকদের মিছিলে অনুমতি দেয়। সেই সঙ্গে সকলকে সতর্ক করে বলে, “মিছিলের সুযোগে দুষ্কৃতীরা আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।” পুলিশের স্পেশাল কমিশনার দীপেন্দ্র পাঠক বলেন, “১৩ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে পাকিস্তান থেকে ৩০০ টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য মানুষকে বিভ্রান্ত করা।”