
দ্য ওয়াল ব্যুরো : ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে কেরলের আলাপ্পুঝা ও কোট্টায়াম জেলায় অনেক পাখি মরতে দেখা যায়। আটটি মৃত পাখির স্যাম্পেল পাঠানো হয় ভোপালের গবেষণাগারে। সেখানে পাঁচটি পাখির শরীরে বার্ড ফ্লুর লক্ষণ দেখা যায়। কেরল সরকার জানিয়েছে, নেনদুর অঞ্চলে মারা গিয়েছে ১৫০০-র বেশি হাঁস। আল্লাপুঝা জেলার কুট্টানাড অঞ্চলেও অনেক পাখি মারা গিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার পাখি মারা গিয়েছে রাজ্যে।
পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসন তৈরি করেছে কন্ট্রোল রুম। স্থির হয়েছে, যেখানে পাখিগুলি মরেছে, তার এক কিলোমিটার পরিধির মধ্যে আরও ৩৬ হাজার পাখিকে মেরে ফেলা হবে। রাজ্যের পশুপালন দফতরের মন্ত্রী কে রাজু বলেছেন, যে চাষিদের পাখি মেরে ফেলা হবে, সরকার তাদের ক্ষতিপূরণ দেবে।
সাধারণত বুনো হাসের শরীরে প্রথম বার্ড ফ্লু দেখা যায়। পরে তা পোলট্রির পাখিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। মূলত মুরগি, টার্কি ও হাঁস এই রোগে আক্রান্ত হয়। এর আগে ২০১৬ সালে কেরলে অনেক জায়গায় বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়েছিল।
রবিবার রাজস্থানে সাতটি কাককে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল জল মহলের সামনে। সেই সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। বার্ড-ফ্লু ভাইরাস ছড়াচ্ছে কিনা সে নিয়ে আশঙ্কা দেখা দেয়। রাজ্যে এখন আড়াইশোর বেশি কাকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত পাখির শরীর থেকে নেওয়া নমুনার মধ্যে বার্ড-ফ্লু ভাইরাসের স্ট্রেনও মিলেছে। রাজস্থান শুধু নয় ঝাড়খণ্ডেও বার্ড-ফ্লুয়ের সতর্কতা জারি হয়েছে।
রাজস্থানের অ্যানিমাল হাসব্যান্ড্রির মুখ্যসচিব কুঞ্জি লাল মিনা বলেছেন, কোটা, যোধপুর, জয়পুর সহ একাধিক জেলায় কাকের মৃত্যু হচ্ছে ভাইরাসের সংক্রমণে। জালাওয়ালের ১০০টি, বারানে ৭২টি, কোটায় ৪৭টি, পালিতে ১৯টি, জোধপুরে ৭টি, জয়পুরে ৭টি মৃত কাক উদ্ধার হয়েছে আজ অবধি।
বার্ড-ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণেই পাখি মৃত্যু হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখতে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল। সেখানেই এইচফাইভএন৮ ভাইরাসের স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছে। চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে রাজ্যের প্রতিটি জেলায়।
বার্ড-ফ্লু ভাইরাস হল বিশেষ ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস যা পাখিদের শরীরেই সংক্রামিত হয়। সেখান থেকে মানুষের শরীরেও ঢুকতে পারে। থুতু-লালা ড্রপলেটের মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। ভারতে এখনও অবধি দুই ধরনের বার্ড-ফ্লু ভাইরাসের স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে—এইচ৫এন১ এবং এইচ৭এন৯। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানুষের শরীরে ঢুকলে করোনাভাইরাসের মতোই দ্রুত বিভাজিত হতে পারে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের স্ট্রেন। সংক্রমণও ছড়াতে পারে দ্রুত। উপসর্গও করোনা সংক্রমণের মতোই।