
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অন্তত ৫ জন কর্মীর মৃত্যু হল সেরাম ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন কারখানার আগুনে! তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভানোর পরে ফের জ্বলে উঠেছে ইস্টিটিউটের আ এক অংশ। ভেতরে ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে বলে আশঙ্কা করছেন দমকলকর্মীরা।
এখনও পর্যন্ত কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই নিশ্চিত করেছেন সেরামের সিইও আদর পুনাওয়ালা। কারণ যে অফিসে আগুন লেগেছে সেখান থেকে অনেকটা দূরেই ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে, তাই সেসবের ক্ষতি হয়নি। কিন্তু বিধ্বংসী আগুন কেড়ে নিল পাঁচ জনের প্রাণ। এদিন মৃতদের কথা জানিয়ে টুইট করে শোক জ্ঞাপনও করেছেন আদর পুনাওয়ালা।
We have just received some distressing updates; upon further investigation we have learnt that there has unfortunately been some loss of life at the incident. We are deeply saddened and offer our deepest condolences to the family members of the departed.
— Adar Poonawalla (@adarpoonawalla) January 21, 2021
দমকল সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৯ জনকে। সম্পূর্ণ খালি করে দেওয়া হয়েছে সেরামের ওই ভবনটি। ভিতরে আরও কেউ এখনও আটকে আছেন তা খতিয়ে দেখছেন দমকল কর্মীরা। প্রচণ্ড ধোঁয়ায় উদ্ধারকাজে ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টে নাগাদ সেরামের টার্মিনাল-১ গেটের কাছে আগুন লেগে যায়। সূত্রের খবর, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন। গলগল করে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকলের দশটি ইঞ্জিন। দেশজুড়ে কয়েক লক্ষ টিকার ডোজ সরবরাহ করেছে সেরাম। ধাপে ধাপে টিকার ভায়াল পুণে থেকে এসে পৌঁছচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। এই চরম ব্যস্ততার মধ্যেই সেরামের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে সকলে হতচকিত হয়ে যায়।

ভারতে শুধু নয় বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থা পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট। মঞ্জরি কমপ্লেক্স এলাকায় সেরামের আট থেকে ন’টি ওয়ার্কশপ আছে। সবকটাই বহুতল বিল্ডিং। প্রায় ১০০ একর জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে আছে বিল্ডিংগুলি। তার কোথাও টিকা নিয়ে গবেষণা হয়, কোথাও টিকার উৎপাদন হয়, আবার ভ্যাকসিন স্টোর করে রাখার আলাদা ইউনিটও আছে। করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক শুধু নয়, অন্যান্য রোগেরও টিকা বানায় ভ্যাকসিন। প্রতিদিনই বিপুল উৎপাদন হয় ইউনিটগুলোতে।
আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। দমকলকর্মীদের অনুমান, মঞ্জরি কমপ্লেক্স এলাকায় সম্প্রতি কিছু নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।
ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রজেনেকার সঙ্গে চুক্তি করে তাদের চ্যাডক্স টিকা ভারতেই তৈরি করেছে সেরাম। দেশে তৈরি এই টিকার নাম কোভিশিল্ড। পুণের ফার্মেই টিকার উৎপাদন হচ্ছে। সেরামের কর্ণধার আদর পুণাওয়ালা জানিয়েছে, মার্চের মধ্যেই কোভিশিল্ড টিকার তিন থেকে চার কোটি ডোজ বিতরণ করা হবে দেশের সবকটি রাজ্যে। এখনই প্রায় ৬০ লক্ষ ডোজ বন্টন করা হয়েছে। বছর শেষের আগেই প্রায় ১০০ কোটি টিকার ডোজ তৈরির বৃহত্তর পরিকল্পনা আছে সেরামের। প্রতিবেশী দেশগুলিতেও কোভিশিল্ড টিকার ডোজ পাঠানো হবে। সে প্রস্তুতিও চলছে। কাজেই এখন প্রতিদিন টিকার বিপুল উৎপাদন হচ্ছে। এমন সময় আগুন লাগার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।