
দ্য ওয়াল ব্যুরো : গত ১ জানুয়ারি দিল্লির তাপমাত্রা ছিল ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপরে বৃহস্পতিবার সকালেই রাজধানীতে শীত পড়েছিল সবচেয়ে বেশি। দক্ষিণ দিল্লির সফদরজং অবজারভেটরি থেকে জানানো হয়, এদিন সকালে দিল্লির তাপমাত্রা ছিল দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিল্লির উপকণ্ঠে পালাম অবজারভেটরি জানিয়েছে, সেখানে সকালে তাপমাত্রা ছিল ৪.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শহরে দূষণও ছিল খুব বেশি। দিল্লির কোনও কোনও অঞ্চলে ঘন কুয়াশা দেখা গিয়েছে।
অতীতে দিল্লিতে শীতে ব্যাপক দূষণ দেখা দিত। সেজন্য সরকার বাধ্য হয়ে একদিন অন্তর জোড় ও বিজোড় সংখ্যায় গাড়ি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। শীতে সবরকম নির্মাণও বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু এবছর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই সরকারের দাবি।
দিল্লির প্রতিবেশী রাজ্য পাঞ্জাব ও হরিয়ানাতেও রীতিমতো ঠান্ডা পড়েছে। হরিয়ানার নারনাউলে তাপমাত্রা নেমেছে ১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বৃহস্পতিবার সকালে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার বেশ কয়েকটি অঞ্চল ঢেকে গিয়েছে ঘন কুয়াশার চাদরে। জম্মু-কাশ্মীরে ডাল লেক ও তার আশপাশে আরও কয়েকটি জলাশয়ের জল জমে বরফ হয়ে গিয়েছে। শ্রীনগরের তাপমাত্রা নেমেছে মাইনাস ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গত ৩০ বছরে শহরের তাপমাত্রা কখনও অত নামেনি। গুলমার্গে ট্যুরিস্ট রিসর্টে এদিন সকালে তাপমাত্রা নেমেছে মাইনাস সাত ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বুধবার রাতে সেখানে তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শীতের মধ্যেই বার্ড ফ্লু ছড়ানোর আশঙ্কায় কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে দিল্লি। ইতিমধ্যে শহরে মুরগি বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে উত্তর ও দক্ষিণ দিল্লি পুরসভা। একইসঙ্গে হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলিকে পুরসভা সতর্ক করে বলেছে, তারা যেন পোলট্রির মুরগির মাংস বা ডিমের কোনও খাবার বিক্রি না করে। এর আগেই দিল্লির স্বাস্থ্য দফতর থেকে শহরবাসীর উদ্দেশে বলা হয়েছে, কেউ আধসিদ্ধ মুরগির মাংস খাবেন না। হাফ বয়েলড ডিমও খাবেন না।
পুরসভাগুলি বলেছে, কেউ অযথা আতঙ্কিত হবেন না। কারণ এইচফাইভএনএইট পাখিদের মধ্যে খুব সংক্রামক হলেও মানুষের শরীরে তা সংক্রমণের সম্ভাবনা কম। সাধারণ মানুষকে বলা হয়েছে, মৃত পাখি দেখলে কেউ ছোঁবেন না। এক্ষেত্রে কন্ট্রোল রুমে ফোন করুন।
স্বাস্থ্য দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “পোলট্রির মাংস বা ডিম পুরো সিদ্ধ হলে তবেই খাবেন। পোলট্রির মাংস খেতে হলে তা ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ৩০ মিনিট ফুটিয়ে নেবেন।”
সম্প্রতি রাজধানীর সঞ্জয় লেকে বেশ কয়েকটি হাঁস মরে ভাসতে দেখা যায়। এছাড়া বিভিন্ন পার্কে বহু কাক মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ময়ূর বিহার ফেজ থ্রি-র একটি পার্ক, দ্বারকার একটি পার্ক ও সঞ্জয় লেক থেকে মৃত পাখির নমুনা ভোপালে গবেষণাগারে পাঠানো হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায়, পাখিগুলো অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জায় মারা গিয়েছিল।
এর পরে দিল্লি সরকার সঞ্জয় লেক স্যানিটাইজ করে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে গাজিপুরে পোলট্রির বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাইরে থেকে শহরে প্রসেসড এবং প্যাকেজড মুরগির মাংস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।