
দ্য ওয়াল ব্যুরো : কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কায় প্রায় একমাস বন্ধ ছিল বাংলাদেশের সব কলকারখানা। চলতি সপ্তাহে বেশিরভাগ কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। সরকারের সমালোচকদের বক্তব্য, দেশ থেকে করোনা পুরোপুরি নির্মূল হওয়ার আগেই এভাবে কলকারখানা খুলে দেওয়া ঠিক হয়নি। এর ফলে কিছুদিনের মধ্যে ফের বড় আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণ।
বাংলাদেশে মূলত বস্ত্র কারখানাগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে আগের চেয়ে কম সংখ্যক শ্রমিক কাজ করছেন। রোগ যাতে না ছড়ায় সেজন্য পালন করা হচ্ছে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা। বাংলাদেশে বস্ত্র কারখানার সংখ্যা চার হাজার। সেখানে প্রায় ৪০ লক্ষ শ্রমিক কাজ করেন। ঠিক কতগুলি কারখানা খুলেছে, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। বাংলাদেশ গারমেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, দেশে কাজ শুরু করেছে ৮৫০ টি কারখানা। যে শ্রমিকরা কারখানার কাছাকাছি থাকেন, কেবল তাঁরাই কাজ করছেন। অপর একটি সূত্রের খবর ২ হাজার কারখানা খুলেছে। ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপের সচিব মহম্মদ আবদুর রেজ্জাক –মেল মারফৎ জানিয়েছেন, বাংলাদেশে গারমেন্টস ফ্যাকটরিগুলি কাজ শুরু করায় বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ডগুলি খুশি হয়েছে। কারখানায় যথাযথ নিরাপত্তা বিধি মেনে চলা হচ্ছে। বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে দেখা হচ্ছে, ঠিকমতো বিধি মানা হচ্ছে কিনা। এখনও পর্যন্ত ১০৫ টি কারখানায় ইনস্পেকশন হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, মাত্র চারটিতে বিধি মানা হচ্ছিল না।
কিছুদন আগে বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, যে ব্যবসাগুলি খুব চাপের মধ্যে আছে, সেগুলি খুলতে অনুমতি দেওয়া হবে। বস্ত্র কারখানাগুলি আশঙ্কা করছিল, অবিলম্বে উৎপাদন শুরু না করলে আন্তর্জাতিক বাজারে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ভারত ও শ্রীলঙ্কার কোম্পানিগুলির কাছে প্রতিযোগিতায় হেরে যাবে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষস্থানীয় অফিসার সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, ঢাকার কাছে একটি শিল্পাঞ্চল যেন অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে কোভিড ১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬৬৭ জন। মারা গিয়েছেন ১৬৮ জন। ৮ মার্চ প্রথম সেদেশে একজনের শরীরে করোনা ধরা পড়ে। দেশে রোজ গড়ে ৫০০ জন ওই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশের লোকসংখ্যা ১৬ কোটি। সেখানে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে মাত্র ২৫ টি জায়গায়।

সরকার কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শুনে পথে বেরিয়ে এসেছেন হাজার হাজার শ্রমিক। তাঁরা কারখানার গেটে ভিড় করেছেন। তাঁদের চাকরি আছে কিনা, তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন অনেকে। এত মানুষকে ভিড় করতে দেখে নানা মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কল্পনা আখতারের বক্তব্য, “এখন যদি কয়েকশ মানুষ নতুন করে অসুস্থ হয়ে পড়েনব, তার দায় কে নেবে?”