
দ্য ওয়াল ব্যুরো : রাজধানী দিল্লিতে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ দেখা দিতেই মুরগি বিক্রি নিষিদ্ধ করল উত্তর ও দক্ষিণ দিল্লি পুরসভা। একইসঙ্গে হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলিকে পুরসভা সতর্ক করে বলেছে, তারা যেন পোলট্রির মুরগির মাংস বা ডিমের কোনও খাবার বিক্রি না করে। এর আগেই দিল্লির স্বাস্থ্য দফতর থেকে শহরবাসীর উদ্দেশে বলা হয়েছে, কেউ আধসিদ্ধ মুরগির মাংস খাবেন না। হাফ বয়েলড ডিমও খাবেন না।
একইসঙ্গে পুরসভাগুলি বলেছে, কেউ অযথা আতঙ্কিত হবেন না। কারণ এইচফাইভএনএইট পাখিদের মধ্যে খুব সংক্রামক হলেও মানুষের শরীরে তা সংক্রমণের সম্ভাবনা কম। সাধারণ মানুষকে বলা হয়েছে, মৃত পাখি দেখলে কেউ ছোঁবেন না। এক্ষেত্রে কন্ট্রোল রুমে ফোন করুন।
স্বাস্থ্য দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “পোলট্রির মাংস বা ডিম পুরো সিদ্ধ হলে তবেই খাবেন। পোলট্রির মাংস খেতে হলে তা ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ৩০ মিনিট ফুটিয়ে নেবেন।”
সম্প্রতি রাজধানীর সঞ্জয় লেকে বেশ কয়েকটি হাঁস মরে ভাসতে দেখা যায়। এছাড়া বিভিন্ন পার্কে বহু কাক মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ময়ূর বিহার ফেজ থ্রি-র একটি পার্ক, দ্বারকার একটি পার্ক ও সঞ্জয় লেক থেকে মৃত পাখির নমুনা ভোপালে গবেষণাগারে পাঠানো হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায়, পাখিগুলো অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জায় মারা গিয়েছিল।
এর পরে দিল্লি সরকার সঞ্জয় লেক স্যানিটাইজ করে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে গাজিপুরে পোলট্রির বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাইরে থেকে শহরে প্রসেসড এবং প্যাকেজড মুরগির মাংস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
গত এক মাসের মধ্যে দিল্লি বাদে কেরল, রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ, গুজরাত, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে বার্ড ফ্লু-র সংক্রমণ ঘটেছে।
ওই রোগে সবচেয়ে বেশি পাখি মারা গিয়েছে হরিয়ানায়। সরকারের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গত কয়েক সপ্তাহে হরিয়ানায় ৪ লক্ষ পাখি মারা গিয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর ও ছত্তিশগড়কেও বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ থেকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
সতর্ক হয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। গত সোমবার নবান্ন থেকে সব জেলার মেডিকেল অফিসারদের বলা হয়েছে, কোথাও পোলট্রির মুরগি অস্বাভাবিক কারণে মারা গেলে, বা কোনও বন্য পাখির অস্বাভাবিক কারণে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটলে তক্ষুনি যেন তা প্রাণী সম্পদ ও জনস্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়। মৃত পাখি বা পোলট্রির সংস্পর্শে যাঁরা এসেছে তাঁদের উপর নজরও রাখতে হবে। তার মধ্যে কোনও উপসর্গ দেখা যাচ্ছে কিনা। যদি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো কোনও উপসর্গ দেখা যায় তা হলে সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট করতে হবে।
নোটিসে বলা হয়েছে, যাঁরা মৃত পাখির সংস্পর্শে আসবেন এবং যাঁদের উপসর্গ দেখা যাবে তাঁদের ‘কেমোপ্রফিল্যাক্সিস’ এবং ‘ওসেল্টামিভির’ ওষুধের দশ দিনের ডোজ দিতে হবে।