
দেশের আর্থিক হাল ফেরাতে সাহসী পদক্ষেপ চাই, ‘অ্যানিম্যাল স্পিরিট’ দরকার: রঘুরাম রাজন
এই পরিস্থিতিতে ভারতের অর্থনীতিকে কোন উপায়ে চাঙ্গা করা যায় সেই প্রসঙ্গে এক আলোচনা সভায় রাজন বলেন, "এখন অ্যানিম্যাল স্পিরিটের মতো সাহসী পদক্ষেপ দরকার। কৃষি ক্ষেত্রে যা যা ঘোষণা করা হয়েছে তাতে আমি কিছু সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি কিন্তু আমাদের আরও অনেক কিছু করা প্রয়োজন।"
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনা পরিস্থিতিতে সংকটের মুখে পড়া ভারতীয় অর্থনীতিকে বাঁচাতে সাহসী পদক্ষেপ চাই কেন্দ্রীয় সরকারে। এমনটাই দাবি করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার উপায় হিসেবে ‘অ্যানিম্যাল স্পিরিট’ দরকার বলেও মন্তব্য করেছেন রাজন। একই সঙ্গে তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, মূদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দিকেও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে নজর রাখতে হবে।
আরও পড়ুন
সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন, তদন্তে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট
গত কয়েক বছর ধরেই ভারতের আর্থিক উন্নয়ন কমতির দিকে। এর ফলে সমকক্ষ অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারত আর্থিক ক্ষেত্রে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। এর উপরে করোনা পরিস্থিতি আরও সংকট তৈরি করেছে। মহামারী পরবর্তী পরিস্থিতিতে এখন যেটুকু হিসেব করা যাচ্ছে তাতে চলতি অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি খুব বেশি হলে ৯.৫ শতাংশ হতে পারে। ইতিমধ্যেই অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং আরবিআই এই সংকট কাটিয়ে উঠতে কিছু সংস্কারের কথা বলেছে।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের অর্থনীতিকে কোন উপায়ে চাঙ্গা করা যায় সেই প্রসঙ্গে এক আলোচনা সভায় রাজন বলেন, “এখন অ্যানিম্যাল স্পিরিটের মতো সাহসী পদক্ষেপ দরকার। কৃষি ক্ষেত্রে যা যা ঘোষণা করা হয়েছে তাতে আমি কিছু সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি কিন্তু আমাদের আরও অনেক কিছু করা প্রয়োজন।”
অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির প্রভাব ও তার থেকে মুক্তির উপায় কী? এই বিষয়ে আলোচনায় অর্থনীতিবিদ রঘুরাম রাজন বলেন, এখন ভারতের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যে যে সংস্কার দরকার তার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকা প্রয়োজন। চাই রাজনৈতিক ঐকমত্য। খুব দ্রুত রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য পদক্ষেপ করতে হবে। ভারত যে সংকট কাটিয়ে এগিয়ে যেতে পারে সেটা এই সময়ে প্রমাণ করার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, “আগামী কয়েক বছরে যদি সেটা করা যায়, যদি সঠিক ভাবে সংস্কারের পদক্ষেপ করা যায়, শুধু কথায় নয়, কাজের ক্ষেত্রেও সংস্কার কার্যকর করা যায় তবে আমাদের সুযোগ আছে বলেই আমি মনে করি।”
বর্তমানে আমেরিকায় শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত রাজন কেন্দ্রীয় সরকারের ‘আত্মনির্ভর’ ভারত গঠনের উদ্যোগকে সমর্থন জানালেও বলেন, এটা ভাল চেষ্টা কিন্তু সবার আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অক্ষমতাগুলিকে শুধরে নিতে হবে। “যদি আমরা কথা বেশি বলে কাজ কম করি তবে আমি মনে করি কাজের কাজ হবে না। আমি অর্থনীতির এক টানা মন্থর গতিকে ভয় পাচ্ছি। এখন আমাদের শক্তিশালী, দীর্ঘমেয়াদি এবং বুদ্ধিমান পদক্ষেপ করতে হবে।”
সম্প্রতি চেন্নাই ও কলকাতার ছোট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন রঘুরাম রাজন। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকেই খুব সংকটে এবং তাদের আর্থিক সহায়তা দরকার। তাঁর বক্তব্য, আমাদের সরকার বলেছে, অর্থনৈতিক কাজকর্ম পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে আর্থিক সাহায্য করা হবে। কিন্তু ততদিন চালিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্যও নেই অনেকের। ততদিনে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধও হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রাজনের।