
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পোশাকের উপর দিয়ে নাবালিকা বা নাবালকের শরীরে আপত্তিজনক স্পর্শ করা পকসো আইনে যৌন হেনস্থার সমান অপরাধ নয়। প্যান্টের জিপ খোলাও যৌন নির্যাতন নয়। কয়েক দিন আগে বম্বে হাইকোর্টের এই দুই রায় ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল সারা দেশে। সমস্ত মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছিল এই রায়ের বিরুদ্ধে। এবার ফের বিতর্কের মুখে পড়ল সেই বম্বে হাইকোর্টই। ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত এক অপরাধীকে মুক্তি দিল আদালত। রায় ঘোষণায় আবারও রইল কিছু বিতর্কিত যুক্তি।
২০১৭ সালের একটি ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরে সে মামলা আদালতে উঠেছিল। জানা যায়, বছর ১৬-র এক কিশোর তার নিজের খুড়তুতো বোনকে ধর্ষণে অভিযুক্ত হয়েছিল। বোনের বয়স ছিল সে সময়ে ১৫। ওই কিশোর আদালতে দাবি করে, তারা একসঙ্গেই থাকত এবং সে বোনের সম্মতিতেই সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিল। শুনানি চলাকালীন মেয়েটি তা মেনেও নেয়।
এর পরেই আদালত জানায়, অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি আইনত এখনও ‘অস্পষ্ট’। কারণ নাবালিকার সম্মতিকে কখনও ‘সম্মতি’ বলে ধরা হয় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নাবালিকার বয়ানের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছ। সে প্রথমে ধর্ষণের অভিযোগ আনলেও পরে নিজেই নিজের বয়ান থেকে সরে আসে সে, মেনে নেয় এ সম্পর্কে তার সম্মতি ছিল। এই কথা জানিয়ে মুক্তি দেওয়া হয় কিশোরকে। তার বর্তমানে বয়স ১৯ বছর।
জানা গেছে, ঘটনাটি ২০১৭ সালে ঘটলেও, প্রথম অভিযোগ দায়ের হয় ২০১৮ সালের মার্চ মাসে। প্রথমে মেয়েটি স্কুলের এক বান্ধবীকে জানায়। তাকে অবসাদে ভুগতে দেখে সেই বান্ধবী স্কুলের এক শিক্ষিকাকে সব কথা বলে। তিনি প্রধান শিক্ষিকাকে বিষয়টি জানিয়ে, তার পরে মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে থানায় গিয়ে এইআইআর করেন। এফআইআর-এ উল্লেখ করা ছিল, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মেয়েটির দাদা তাকে ধর্ষণ করে এবং ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেও যৌন হেনস্থা করা হয় তার।
এর পরে রুজু হয় মামলা। ম্যাজিস্ট্রেটকে গোপন জবানবন্দিও দেয় অভিযোগকারিণী কিশোরী। নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয় ওই কিশোর। তাকে ১০ বছরের সাজা শোনানো হয়। এর পরে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সম্প্রতি বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ছেলেটি। সেখানেই সামনে আসে পারস্পরিক সম্মতির কথা। এমনকি মেয়েটি এ-ও জানায়, শিক্ষিকার চাপে পড়েই অভিযোগ দায়ের করেছিল সে।
এখানেই মামলা ঘুরে যায়। আদালত জানায়, নাবালিকার সম্মতির বিষয়টি এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে কিশোরের অপরাধের গুরুত্ব সমান থাকছে না। মুক্তি দেওয়া হয় কিশোরকে।