
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বনগাঁ থেকে রানাঘাট, তারপর আজ পুরুলিয়া—মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় একটা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। তা হল, দিদির বক্তৃতা শুরু হলেই একেবারে সামনে থেকে কয়েকজন উঠে দাঁড়াচ্ছেন। তার পর অভাব,অভিযোগ, অপ্রাপ্তি, বঞ্চনার কথা তুলে ধরছেন। দিদি যখন বলেন, সব করে দিয়েছি। তখনই তারা বলেন কেন পাইনি ইত্যাদি প্রভৃতি।
মঙ্গলবার পুরুলিয়ার হুটামুড়া ফুটবল মাঠেও ফের তা হল। তাতে চূড়ান্ত বিরক্তি ঝরে পড়ল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। তাঁর অনুমান, এ সব হয় বিজেপি করাচ্ছে বা সিপিএম। কিছু লোককে শিখিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
এদিন দিদির বক্তৃতা সবে মিনিট পনেরো হয়েছে কি হয়নি! হঠাৎ সামনে থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েন কিছু লোকজন। রেগে যান দিদি। মমতা বলেন, “এই বসুন তো বসুন, প্রতিটা জায়গায় চলে আসে দু-চার জন। কিছু বক্তব্য থাকলে লিখে আনবেন। মিটিংয়ে গণ্ডগোল করবেন না। আমাকে এখানে বললে একটি কাজও করব না। মিটিং নষ্ট করার অধিকার কে দিচ্ছে? পোষায় আর না। যতই দাও ততই চায়। দেওয়ার সিস্টেম আছে তো।”
কিন্তু তাঁরা তো ‘দিদিকে বলো’ পণ করেছেন। মমতা আরও রেগে যান। বলেন, “আরে তোমরা তো সাত আটটা লোক মিলে পাবলিক মিটিং ডিস্টার্ব করছ। এ বার কিন্তু মিটিংয়ে ডিস্টার্ব করলে আমি কিন্তু অ্যাকশন নেব। অন্য কারও মিটিংয়ে এরকম করতে পারতে? বিজেপি শিখিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আমি কিন্তু বিজেপির মিছিলে লোক পাঠিয়ে দেব, সিপিএমের মিছিলে লোক পাঠিয়ে দেব। চালাকি বুঝিয়ে দেব। প্রত্যেকটা মিটিংয়ে এরকম করছে। মেয়েদের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে আর এরকম করছে।”
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যাঁরা এটা করছেন তাঁরা কি সিপিএম বা বিজেপির পাঠানো লোক? এ ব্যাপারে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেন, “দিদিমণির মিটিংগুলিতে এই ঘটনা প্রমাণ করে দিচ্ছে সরকার দুয়ারে যায়নি, তাই সাধারণ মানুষ দিদির দুয়ারে গিয়ে দাবি জানাচ্ছেন। সবাই তা জেনে যাচ্ছে দেখে দিদি রেগে যাচ্ছেন।”
বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “সারের দাম বেড়েছিল কেন এই প্রশ্ন তোলায় জঙ্গলমহলের কৃষক শিলাদিত্য চৌধুরীকে মাওবাদী বলে জেল খাটিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন আবার সিপিএমের ভূত দেখছেন!”
যদিও এই ধমকের কিছুটা পর মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীর উদ্দেশে বলেন, “এই স্বরূপ ওদের কাগজগুলো নিয়ে নাও তো! এই ভাই তোমরা কিছু মনে কোরো না। তোমাদের বকাবকি করে আমারই মনটা খারাপ হয়ে গেল!”