
দ্য ওযাল ব্যুরো: আজ সকালেই টুইট করে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে আক্রমণ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এর পরে সাংবাদিক বৈঠক করেও সরকারকে একহাত নেন তিনি। জানান, তিনি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করতে চাইলেও তা করা হয়নি। রাজ্যের শিক্ষা রাজনীতির খাঁচায় বন্দি বলে অভিযোগ করেন তিনি। পাশাপাশি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর চিঠির উত্তর দেননি।
এই প্রসঙ্গেই আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে কার্যত ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন, রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগে কোনও খামতি নেই। তার পরেও এথ অভিযোগ ও আক্রমণ মেনে নেওয়া যায় না। রাজ্যপাল কোনও রাজনৈতিক দলের মতো কথা বলতে পারেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “রাজ্যপালের পদের মর্যাদাটা আমরা জানি। আশা করি উনিও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অসম্মান করবেন না। উনি বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী চিঠির জবাব দেন না। আমি কত কিছু সামলাব। সকাল থেকে কোভিড সামলাবো, না ওঁর প্রত্যেকটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাব? যেন আমরা ওঁর চাকর-বাকর! বিজেপির কোন লোকটা মার খেলে, কেন বডি পোড়ানো হলো না… এত প্রশ্ন। তার পরেও ওঁর সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন নথি দেখিয়ে এবং নিজের ফোনের মেসেজ চেক করে জানান, গতকালই রাজ্যপালের সঙ্গে চার বার কথা বলেছেন তিনি। “রাজ্যপাল আমায় অনেক মেসেজ করেছেন। ফোন করেছেন। ওঁর প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। আর কত করব। পারলে সকাল থেকে রাত অবধি ওঁকে প্রণাম করতে হয়, সময় পেলে সেটাও করতাম।”– প্রশ্ন করেন ক্ষুব্ধ মমতা।
মমতা ক্ষোভ উগরে দিয়ে আরও বলেন, “উনি প্রথমে বিহার, ইউপি এবং অন্যান্য রাজ্যের দিকে তাকিয়ে দেখুন। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্তক্ষেপ করে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের সম্মান করি আমি। উনি বলছেন, ভর্তি হতে টাকা নেওয়া হচ্ছে। উনি জানেন না রাজ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে হয়! বলা হয়েছে উপাচার্যরা ট্রেড ইউনিয়ন করছেন। উপাচার্যদের কিছু বললে বাংলা গর্জে উঠবে।”
প্রসঙ্গত, উপাচার্যরা কেন রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে যোগ দেননি, যোগ দিলে কীই বা ক্ষতি হতো, তাই নিয়ে আজ টুইট করে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীও। জানিয়েছেন, এতে পড়ুয়াদের কাছে ভুল মেসেজ যাচ্ছে। রাজ্যপালের সম্মান খর্ব হচ্ছে।
Heaven would not have fallen, had the virtual meeting between the Hon Chancellor and vice Chancellors of Universities in West Bengal been held, this kind of acrimony between two entities can not augur well for the education sectors of West Bengal
(1/3)— Adhir Chowdhury (@adhirrcinc) July 16, 2020
মমতা দাবি করেন, যে বৈঠক নিয়ে রাজ্যপাল অভিযোগ তুলেছেন, সেই বৈঠক নিয়ে শিক্ষা দফতর বিধি অনুযায়ী উত্তর দিয়েছে। আইন মোতাবেক বলা হয়েছে কথা। তার পরেও উনি যে ভাষায় আক্রমণ করছেন, তা কাম্য নয়। মমতার কথায়, “অসহ্য ভাষার দংশনে আমরা লজ্জিত, মর্মাহত। গায়ের জোরে করতে হলে লেট আস ফাইট দ্য ব্যাটেল পলিটিক্যালি, ডেমোক্র্যাটিক্যালি, পিসফুলি।”
মুখ্যমন্ত্রী সবশেষে বলেন, “সরকারের কাজ প্রশাসন চালানো, উনি ওঁর কাজ করুন। আমি চাই উনি ভাল থাকুন। ভাল করে খাওয়াদাওয়া করুন। যোগ ব্যায়াম করুন। মানসিক ভাবে শান্তিতে থাকুন, ভাল থাকুন।”