
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোভিড পরিস্থিতির কারণে জেলা ও প্রদেশ কংগ্রেসের অনেকেই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্যে অংশ নিতে পারেননি। মঙ্গলবার দুপুরে দিল্লির লোধী রোড মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে প্রণববাবুর। তবে কীর্ণাহারের গ্রামের মানুষ যাতে তাঁর পারলৌকিক কাজে অংশ নিতে পারেন তার জন্য পরিবারের কাছে প্রস্তাব দিল কংগ্রেস।
হাসনের কংগ্রেস বিধায়ক মিল্টন রশিদ বলেন, “প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পারলৌকিক কাজের ব্যাপারে তাঁর পুত্রবধূর সঙ্গে কথা হয়েছে। আজ শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার পর দু’এক দিনের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
প্রণববাবুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া তাঁর গ্রাম মিরিটিতে। সকলেরই মন খারাপ পুজোর কথা ভেবে। মন্ত্রী থেকে রাষ্ট্রপতি যখন যে পদেই থেকেছেন প্রণববাবু পুজোর সময় গ্রামকে ভোলেননি। প্রতিবার দুর্গাপুজোয় কীর্ণাহারের বাড়িতে সবটাই হাতে করে করতেন তিনি। কলাবউ স্নান করানো থেকে চণ্ডীপাঠ বা সন্ধিপুজো—নিষ্ঠাভরে সবটা করতেন প্রণববাবু। এ বছর তো পুজো হবেই না। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “মুখুজ্জে বাড়ির সেই জৌলুস আর থাকবে না।” প্রতিবছর ওই চারটে দিন রাষত্রনেতাকে সামনে থেকে দেখতে পেতেন গ্রামের মানুষ। এবার থেকে আর সেটাও হবে না ভেবে মন খারাপ কীর্ণাহারের।
মন খারাপ প্রণববাবুর কলেজের সহপাঠী ষষ্ঠী কিঙ্কর দাসের। গ্রামে ফিরলেই ষষ্ঠীকে ডাকতেন পল্টু। তারপর চলত দেদার আড্ডা। প্রণববাবুর মৃত্যুর পর ষষ্ঠীবাবু বলেন, “কলেজ জীবন থেকেই ওঁকে দেখেছি হইহুল্লোড়ের মধ্যেই থাকতে পছন্দ করতেন। কখনও একা থাকা তাঁর পছন্দ ছিল না। মন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি—যখন যে পদেই থেকেছেন গ্রামে এলেই আমাকে ডেকে পাঠাতেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যেত পুরনো গল্প করে।”

ষষ্ঠীবাবু আরও বলেন, “কলেজ পাশ করার পর পল্টু যখন রাজনীতিতে পা রাখল, তখন থেকেই ওঁর বক্তৃতার ভক্ত ছিলাম আমরা। ’৭১-এর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ও যে বক্তৃতা করেছিল বীরভূমের সভাগুলিতে, তা আজও কানে বাজে। তারপর দিল্লি যাওয়া, মন্ত্রী হওয়া, দশকের পর দশক ক্ষমতার শিখরে থাকা এমনকি দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরও শিকড়ের টান থেকে বিচ্ছিন্ন হননি। গ্রামকে ভোলেননি।”