
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পশ্চিম বর্ধমান: আবার বিতর্কিত মন্তব্য করে স্পটলাইটে বিজেপি সাংসদ এবং যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। কিছুদিন আগেই আসানসোল পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় অবরোধ করার আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সে সময়ও বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন রাজ্য বিজেপির এই সাংসদ। এদিন আবারও তির্যক মন্তব্যের জেরে নতুন করে বিতর্ক ডেকে আনেন ওই সাংসদ। তিনি বলেন, “বিজেপি ক্ষমতায় এলে আসানসোলের মেয়রের চামড়া তুলে নেবে।”
শুক্রবার ১১ই সেপ্টেম্বর রাতে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চ্যাটার্জিকে আসানসোল কর্পোরেশনের একটি জাল ছবি তৈরি করার অভিযোগে গ্রেফতার করে আসানসোল থানার পুলিশ। তার পর পরই বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্যে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। পাশাপাশি আগামী সোমবার রাজ্য বিজেপির তরফে সারা বাংলা জুড়ে রাস্তা অবরোধেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
বিতর্কিত মন্তব্য করার এই ট্র্যাডিশন অবশ্য নতুন কিছু নয়। এর আগেও জামুরিয়া এবং দক্ষিণ থানা বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে।
বিজেপির রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চ্যাটার্জির গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে শনিবার ১২ই সেপ্টেম্বর সকালে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে আন্দোলন শুরু করেন স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা। এই আন্দোলনে অংশ নিতেই শনিবার সকালে বিজেওয়াইএমের রাজ্য সভাপতি এবং বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ আসানসোল কোর্ট চত্বরে উপস্থিত হন। আন্দোলন চলাকালীন পুলিশকে হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এরপরেই সৌমিত্র খাঁ সহ কোর্ট চত্বরে উপস্থিত বিজেপির অন্যান্য নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে আসানসোল থানার পুলিশ। পরে পি.আর বন্ডে তিনি এবং তার সঙ্গের আন্দোলনকারী নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা ছাড়া পান।


এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শনিবার রাজ্য বিজেপিকে একহাত নিলেন আসানসোল কর্পোরেশনের মেয়র।
বিজেপির সাংসদ তথা যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খানের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আসানসোলের মেয়র তথা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি আজ সংবাদমাধ্যমে বলেন, “কখনও কখনও দিলীপ ঘোষ আমার চামড়া তোলেন, কখনও ইনি তোলেন, আবার কখনও অন্য কেউ তুলবেন। আমার চামড়া একটাই, তাই প্রথমে বরং বিজেপি নেতারা সিদ্ধান্ত নিন, কে আমার চামড়া তুলবেন? অন্যথায় এই নিয়ে তারা নিজেদের মধ্যেই অনর্থক লড়াই করবেন।”
বিজেপি নেতার তির্যক মন্তব্যের জের টেনে আসানসোলের মেয়র এদিন এও বলেন, “যদি বিজেপির ক্ষমতায় আসার প্রসঙ্গ তুলি, তাহলে আমরা তার জন্য অপেক্ষা করব।” তিনি বলেন, “আসানসোল কর্পোরেশনের ভুয়ো ছবি ভাইরাল করে পরিবেশকে নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কর্পোরেশন এ বিষয়ে একটি এফআইআর দায়ের করে। এর পরে আইনানুগ ব্যবস্থা যা নেওয়ার তা পুলিশ নিয়েছে। আগামীতে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশই পদক্ষেপ দেবে।”
এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে মেয়র বলেন, আসানসোল কর্পোরেশনের সদর দপ্তরে বোর্ড লাগানোকে কেন্দ্র করে ভাষাগত বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা এই কাজ করছেন তারা নিশ্চয়ই আসানসোলকে ভালোবাসেন না। এর আগে ধর্মকে কেন্দ্র করে, জাতিকে কেন্দ্র করে নানারকম বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। এবার ভাষাগত বিভেদকে হাতিয়ার করে নতুন করে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে বিজেপি তৃণমূলের তরজায় আপাতত সরগরম আসানসোল শিল্পাঞ্চল। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা আগামী ২০২১ এর বিধানসভা ভোটের আগে এই ঘটনা বিজেপিকে আবার পূর্ণশক্তি নিয়ে শিল্পাঞ্চলে আন্দোলন করার অক্সিজেন যোগাল