
দ্য ওয়াল ব্যুরো : দেশে দৈনিক এক লক্ষের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভ্যাকসিনের চাহিদা। এই পরিস্থিতিতে বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিল, যদি কোনও অফিসে টিকা নেওয়ার উপযুক্ত ১০০ জন বা তার বেশি কর্মী থাকেন, তাহলে সেখানে ভ্যাকসিন দেওয়া যেতে পারে। সরকারি ও বেসরকারি, দু’রকম অফিসেই দেওয়া যাবে ভ্যাকসিন। আগামী ১১ এপ্রিল থেকে অফিসে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। সেজন্য প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ইতিমধ্যে নানা মহল থেকে দাবি উঠেছে, যে কোনও বয়সের নাগরিকদেরই ভ্যাকসিন দেওয়া হোক। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, এখনই তা সম্ভব নয়। আপাতত ৪৫ কিংবা তার বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এদিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজ্যগুলির মুখ্য সচিবদের চিঠি দিয়ে বলেছেন, টিকাকরণের পদ্ধতি আরও বাস্তবসম্মত হওয়া চাই। সেজন্য যে সরকারি বা বেসরকারি অফিসে ১০০ বা তার বেশি ভ্যাকসিন নেওয়ার উপযুক্ত কর্মী আছেন, সেখানে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হতে পারে। ওই অফিসগুলিকে ভ্যাকসিনেশান সেন্টার হিসাবে ধরা হবে।
গত সপ্তাহে দিল্লি সহ একাধিক রাজ্য সিদ্ধান্ত নেয়, টিকাকরণ কেন্দ্রগুলি ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হবে। ইতিমধ্যে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্র সহ একাধিক রাজ্যে ভ্যাকসিনের স্টক শেষ হয়ে এসেছে।
মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপী বলেন, “আমাদের রাজ্যে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুত করা আছে, তাতে তিনদিন চলতে পারে। মুম্বইতেও আগামী তিনদিনের বেশি ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি যাতে দ্রুত আরও ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এই রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।” পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্দিষ্ট হিসাব দিয়ে জানান, বুধবার রাজ্যে রয়েছে ভ্যাকসিনের ১৪ লক্ষ ডোজ। তাতে আর তিনদিন চলবে। প্রতিদিন যদি পাঁচ লক্ষ লোককে ভ্যাকসিন দিতে হয়, প্রতি সপ্তাহে আমাদের ৪০ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন লাগবে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে তোপী বলেছেন, “আমাদের বেশিরভাগ ভ্যাকসিনেশান সেন্টারে একটাও ডোজ নেই। সেন্টারগুলি বন্ধ করে দিতে হয়েছে। মানুষ সেখানে এসে ফিরে যাচ্ছেন।”
মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকর বলেন, “আমাদের শহরে ভ্যাকসিনের স্টক শেষ হয়ে এসেছে। আমরা সরকারি হাসপাতালগুলিতেই বেশিরভাগ ডোজ পাঠাচ্ছি। আমাদের এখন এক লক্ষের বেশি কোভিশিল্ড ডোজ আছে। আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন।”
মুম্বইয়ের মেয়র জানিয়েছেন, দ্রুত যদি কেন্দ্রীয় সরকার ভ্যাকসিন না পাঠায় তাহলে যাঁরা ইতিমধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের অনেককে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না। মহারাষ্ট্রের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি (হেলথ) প্রদীপ ব্যাস জানান, বুধ অথবা বৃহস্পতিবারের মধ্যে বহু জেলায় ভ্যাকসিনের স্টক শেষ হয়ে যাবে। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি।
মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মহারাষ্ট্র এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনের ১.০৬ কোটি ডোজ পেয়েছে। তার মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে ৮৮ লক্ষ ডোজ। তিন শতাংশ ডোজ নষ্ট হয়েছে।