
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ‘কবিতা গেল মিছিলে…’
দু’টি দেশের মধ্যে রয়েছে ভাষার মিল, অনেকেই মনে করেন ভাষার কোনও কাঁটাতার হয় না। প্রতিবাদের ভাষা দেশ কালের গণ্ডিকে ছাপিয়ে যায়। সামনেই ভাষা দিবস, ২১-এ ফেব্রুয়ারি। দুই বাংলার আবেগ একই সুরে বাঁধা সাধারণ মানুষের মধ্যে আর এভাবেই বারবার প্রতিবাদে, প্রতিরোধে এক হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের ছাত্র যুব সংগঠনগুলো। এবারও তার অন্যথা হয়নি।
বাংলাদেশের শাহবাগে আন্দোলনের সময় ভারত তথা গোটা বাংলা পাশে দাঁড়িয়েছিল। উত্তাল হয়েছিল ভারত, যার প্রভাব ব্যাপক ভাবে পড়েছিল দেশের যুবসমাজে। এবার সেই শাহবাগ মইদুলের পাশে। জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
এসএফআইসহ বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অধিকারের দাবীতে নবান্ন অভিযানে পুলিশের হামলায় কমরেড মঈদুলের ইসলাম মিদ্যার মৃত্যুর প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল হয় গত ১৯ তারিখ। পশ্চিমবাংলার পাশে দাঁড়ান পূর্ববাংলার ছাত্ররা। ‘বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন- ঢাকা মহানগর সংসদ’-এর ডাকে শাহবাগে মিছিল হয়।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি নবান্ন অভিযানে গিয়ে পুলিশের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছিলেন বাঁকুড়ার কোতলপুরের ডিওয়াইএফআই নেতা মইদুল আলি মিদ্দ্যা। মাথা, কোমর, বুক ও কিডনিতে চোট পান ৩২ বছরের মনসুর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কলকাতায় ময়দানের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ মৃত্যু হয় মইদুলের।
পেশায় অটোচালক মইদুল ডিওয়াইএফআইয়ের বাঁকুড়ার গোপীনাথপুর ইউনিটের সেক্রেটারি ছিলেন। দক্ষ সংগঠক হিসেবেই তাঁর পরিচিতি ছিল। গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাকি কমরেডদের সঙ্গে তিনিও আসেন নবান্ন অভিযানে। একদম সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। ব্যারিকেড ভাঙার পরেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় বাম ছাত্র ও যুব নেতাদের। অভিযোগ ওঠে, লাঠির আঘাতে রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন মইদুল। তাঁকে উদ্ধার করে ময়দানের কাছে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই কয়েক দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন তিনি। কিন্তু সোমবার সকালে শেষ হয়ে গেল তাঁর লড়াই।
২০১৩-তে শাহবাগের আন্দোলন থেকে গণজাগরণ মঞ্চ, সবকিছুর পাশেই দাঁড়িয়েছে ভারত। আর এবার ভারতের, বাংলার ছাত্রযুবদের পাশে দাঁড়িয়ে শাহবাগে স্লোগান উঠলো, “হাল ফেরাও, লাল ফেরাও”। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে সেই আন্দোলনের ছবি পোস্ট করে, যা কিছুক্ষণের মধ্যেই দুটো দেশের ছাত্রদের মনে জোরকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন।