
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শেষ হল মার্কিন কংগ্রেসের ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া। বুধবার উচ্চকক্ষ সেনেটে ভোটাভুটির পরে প্রত্যাশামতোই বেকসুর খালাস পেলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জয় হল সংখ্যাগরিষ্ঠতারই।
আমেরিকার ডেমোক্র্যাটরা অভিযোগ তুলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বিডেন এবং তাঁর ছেলের ব্যাপারে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করতে ইউক্রেনের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন ট্রাম্প নিজে। শুধু তাই নয়, ইউক্রেন এতে রাজি না হওয়ায় তাদের ৪০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। একার সিদ্ধান্তে বন্ধও হয়ে যায় অনুদান।
ডিসেম্বর মাসে এই অভিযোগগে সামনে রেখেই ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করেন ডেমোক্র্যাটরা। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ছিল, মার্কিন কংগ্রেসের কাজে বাধাও দিয়েছেন তিনি। এই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এ এই ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব পাশও হয়ে যায়। তারই ভোটাভুটি ছিল বুধবার। জানা গেছে, প্রথম অভিযোগে ট্রাম্পকে বেকসুর খালাস দেওয়ার পক্ষে ভোট দেন ৫২ জন সেনেটর। ট্রাম্পের বিপক্ষে ভোট দেন ৪৮ জন। আবার দ্বিতীয় অভিযোগের ক্ষেত্রে ৫৩-৪৭ ভোটে সমস্ত অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অনেকেই বলছেন, এমনটা হওয়ারই ছিল। কারণ মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেটে ১০০টির মধ্যে ৫৩টি আসনেরই দখল রয়েছে রিপাবলিকানদের হাতে। বাকি ৪৭টি আসন নিয়ে প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করা সম্ভব নয় বলে জানাই ছিল সকলে। এমনকি ডেমোক্র্যাটিক পার্টিরও এমনটা অজানা ছিল না। কিন্তু তার পরেও ইমপিচমেন্ট করেন তাঁরা। কারণ ফল না পেলেও, ট্রাম্পের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ করতে চেয়েছিলেন তাঁরা।

কিন্তু ইমপিচমেন্টের শেষে ট্রাম্পের এই বেকসুর জয়ী হওয়া ডেমোক্র্যাটদের অস্বস্তি আরও বাড়াতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ এতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যাবে। এমনিতেই বর্তমানে প্রায় ৪৯ শতাংশ মার্কিন ভোটার ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদের যোগ্য প্রার্থী বলে মনে করেন। এর উপর এই উপরি জয় দ্বিতীয় বার ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জিতিয়ে দেওয়ার সুযোগ করে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে কোনও ভাবে যদি মার্কিন কংগ্রেসে দোষী সাব্যস্ত হতেন ট্রাম্প, তাহলে তাঁকে প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়তে হতো। কিন্তু তেমনটা তো হলই না, উল্টে বেকসুর খালাস পাওয়ার পরেই ট্রাম্পের নির্বাচনী দফতর থেকে ডেমোক্র্যাটদের উদ্দেশে কটাক্ষ করে বলা হয়েছে, “ডেমোক্র্যাটরা জানতেন, কোনও ভাবেই ট্রাম্পকে ইমপিচ করা যাবে না। তার পরেও কেবল ভোটের দিকে তাকিয়ে এমনটা করেছেন তাঁরা।”