
দ্য ওয়াল ব্যুরো : ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিন কি মানুষের দেহে ব্যবহারের উপযুক্ত? দেশ জুড়ে যখন কোভিডের ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে, তখন এমনই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলল প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড ও ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিন, দু’রকম ভ্যাকসিন অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই দু’টি ভ্যাকসিন বিভিন্ন রাজ্যে পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের মুখপাত্র মনীশ তেওয়ারি কোভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
শ্রী আনন্দপুর সাহিবের সাংসদ মনীশ তেওয়ারি বুধবার টুইট করে বলেন, “সরকার এখন বলছে, মানুষ কোন ভ্যাকসিন নেবেন তা নিজে পছন্দ করতে পারবেন না। কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হয়নি। সেই ভ্যাকসিন কতদূর কার্যকরী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।”
হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেকের সঙ্গে যৌথভাবে কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ। সরকার বলেছিল, ভারত যে নিজের উদ্যোগে ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারে তা প্রমাণ করেছে কোভ্যাক্সিন।
ওই ভ্যাকসিন এখনও তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করেনি। তাই একসময় সরকার বলেছিল, জরুরি ভিত্তিতে, বিকল্প হিসাবে কোভ্যাক্সিন ব্যবহার করা যেতে পারে। পরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, ভারতীয়রা এখনই দু’টি ভ্যাকসিনের মধ্যে ইচ্ছামতো কোনও একটিকে নিতে পারবেন না।
মনীশ তেওয়ারি টুইটারে লিখেছেন, “ভ্যাকসিন দেওয়ার নাম করে তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চালানো উচিত নয়। ভারতীয়রা গিনিপিগ নয়।”
Is Bharath Biotech vaccine safe for human use?
Can govt guarantee both it’s safety and efficacy?
Aren’t palliatives for emergency use & vaccines a preventive measure?
Can vaccine be a palliative?@drharshvardhan https://t.co/YFXxeHehjl pic.twitter.com/Ph1QpyZm0G
— Manish Tewari (@ManishTewari) January 11, 2021
শনিবার অর্থাৎ ১৬ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণ শুরু হয়ে যাবে দেশজুড়ে। মঙ্গলবারই দেশের ১২ থেকে ১৩টি শহরে কোভিশিল্ড টিকা পাঠিয়ে দিয়েছে পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট। কয়েকটি ধাপে প্রতিষেধক পাঠানোর কাজ চলবে। আজ থেকে আসরে নেমেছে ভারত বায়োটেকও। ভোর থেকেই ভ্যাকসিন ভ্যান বের হতে শুরু করেছে হায়দরাবাদের ফার্ম থেকে। প্রথম দফায় কোভ্যাক্সিনের ভায়াল দিল্লিতে পৌঁছে দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান।
কয়েক দফায় হায়দরাবাদের ফার্ম থেকে ভ্যাকসিন-বক্স আসবে দিল্লিতে। সেখান থেকে আরও কয়েকটি শহরে টিকার ভায়াল পৌঁছে দেওয়া হবে। আজ সকাল ৬টা ৪০ মিনিট নাগাদ এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-৫৫৯ বিমানে ভ্যাকসিনের বাক্সগুলি তুলে দেওয়া হয়। প্রতিটি বাক্সের ওজন ৮০.৫ কিলোগ্রাম। বাক্সের ভেতরে ঠাসা ভ্যাকসিনের ভায়াল। এক একটি ভায়ালে ৬-৭ জনকে টিকা দেওয়া সম্ভব। প্রতি ডোজের মাত্রা ০.৫ মিলিলিটার।
পুণে থেকে কোভিশিল্ড টিকা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যাত্রী বিমানকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল। এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইস জেট, ইন্ডিগো সহ আটটি উড়ানে কোভিশিল্ড টিকার বাক্স পৌঁছে দেওয়া হয়েছে দিল্লি, আহমেদাবাদ, কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, কার্নাল, হায়দরাবাদ, বিজয়ওয়াড়া, গুয়াহাটি, লখনৌ, চণ্ডীগড় ও ভুবনেশ্বরে। প্রথম দফায় মোট ৫৬ লাখ ৫০ লক্ষ টিকার ডোজ সরবরাহ করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট।
ভারত বায়োটেক জানিয়েছে, কয়েকটি দফায় টিকার ভায়াল পৌঁছবে দেশের সমস্ত রাজ্যে। কোল্ড-স্টোরেজের স্বাভাবিক ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেই ভাল থাকবে টিকা। শনিবার থেকে কোভিশিল্ড টিকার সঙ্গে কোভ্যাক্সিনের ডোজ দেওয়া শুরু হবে।