
দ্য ওয়াল ব্যুরো : রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেট স্থির করে যে সংস্থা, তার নাম মনিটারি পলিসি কমিটি। মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে তার দু’দিনের বৈঠক। ইতিমধ্যে নানা তথ্য থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, তা ফের ধাক্কা খাচ্ছে। করোনা সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তাতে অর্থনীতির বিকাশের গতি হয়ে পড়ছে মন্থর।
অর্থনীতির নানা ক্ষেত্র থেকে জুলাইতে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যায়, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার যথেষ্টই কম। শুধু তাই নয়, গত মে এবং জুন মাসে আর্থিক পুনরুজ্জীবনের যে আশা দেখা গিয়েছিল, তাও ধাক্কা খেয়েছে জুলাই মাসে।
অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, এপ্রিল ও মে মাসে লকডাউনের জন্য বাজার বন্ধ ছিল। এই অবস্থায় মানুষের যে চাহিদা সৃষ্টি হয়েছিল, তার দৌলতেই জুন মাসে বিক্রি বেড়েছিল নানা পণ্যের। সেই চাহিদা এখন আর নেই। ফলে মন্দা দেখা দিয়েছে বাজারে। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের অর্থনীতি সংকুচিত হয়ে চলবে।
একটি তথ্যে দেখা যায়, জুন মাসে ম্যানুফ্যাকচারইং সেক্টরে বিকাশ হয়েছিল ৪৭.২ শতাংশ হারে। জুলাইতে তা কমে ৪৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জুলাইতে জিএসটি আদায় হয়েছে ৮৭ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। জুনে জিএসটি আদায় হয়েছিল ৯০ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় এবছরের জুলাইতে জিএসটি আদায় হয়েছে ১৪.৩ শতাংশ কম।
অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক থেকে জানা যায়, জুলাইতে আর্থিক কার্যকলাপের বিকাশ সামগ্রিকভাবে নিম্নমুখী হয়নি। তা থেমে আছে একই জায়গায়। ২৬ জুলাই সাপ্তাহিক নমুরা ইন্ডিয়া বিজনেস রিসাম্পশান ইনডেক্স ছিল ৭০.৩ এর ঘরে। ২ অগাস্ট তা ছিল ৭০.৪ এর ঘরে।
দেশে গাড়ির বিক্রি কী পরিমাণে হচ্ছে তা থেকে বোঝা যায় অর্থনীতির হাল কীরকম। জুলাইতে দেশের বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা সংস্থা মারুতি সুজুকির গাড়ি বিক্রি বেড়েছে ৮৮ শতাংশ। জুনের তুলনায় জুলাইতে গাড়ির বিক্রি বেড়েছে ১.৩ শতাংশ। যদিও আগামী দিনে গাড়ির চাহিদা বজায় থাকবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে বিনিয়োগকারীদের। সোমবার মারুতি সুজুকির শেয়ারের দাম কমেছে ১.৫ শতাংশ।
জুলাই মাসে ডিজেল বিক্রি কমেছে ১৩ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে গত বছরের তুলনায় এবছর ডিজেলের বিক্রি কমেছে ২১ শতাংশ। জুলাইয়ের আগে কয়েক মাসে ডিজেলের বিক্রি যথেষ্ট বেড়েছিল। তা দেখে মনে হয়েছিল, কঠোর লকডাউনের পরে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে ভারতের অর্থনীতি। এমনিতে প্রতি বছরই বর্ষার সময় ডিজেল কম বিক্রি হয়। কিন্তু এবছর ওই জ্বালানির বিক্রি অন্যান্য বছরের বর্ষাকালের তুলনায় কমেছে আট শতাংশ।