
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শীতকাল মানেই হৈহুল্লোড়ের মরশুম। হাজারো মেলা, কার্নিভাল, আনন্দ-উৎসব লেগেই থাকে এ ঋতু জুড়ে। যদিও এ বছর কোভিডের গ্রাসে তাতে অনেকটাই ভাটা পড়েছে, তবু কিছু জিনিস আবহমান, থামে না। আর এই আবহমান শব্দের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে, ঐতিহ্য। এ দেশের এক অন্যতম ঐতিহ্য নিয়েই এই শীতে এক অভিনব উৎসব আয়োজিত হয়েছে শহর কলকাতায়। সৌজন্য কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ। প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যের নানারকম ফ্যাশন মিলেমিশে যাবে বেনারসির পটভূমিতে। নারীর হোক বা পুরুষের, হাজারো নতুন ধরনের পোশাকের সন্ধান দেবে এই শো। দেবে ইতিহাস আর বর্তমানের দুরন্ত মেলবন্ধনের এক অভিনব আস্বাদ।
অভিনব বেনারসি-ফ্যাশন শো
৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে নটায় কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ মল, কালীঘাটে হতে চলেছে এক অভিনব ফ্যাশন শো। কেবল বেনারসির ওপরেই হবে এই শো। বেনারসি দিয়ে যে শাড়ি তো বটেই, তার সঙ্গে আরও কত দুর্দান্ত পোশাক ও ফ্যাশন করা যায়, বেনারসি বিষয়টিকেই যে কোন স্তরে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব, তা এই ফ্যাশন শোয়ে না এলে আপনি বুঝতে পারবেন না। আলোয়, গানে, অভাবনীয় সুন্দর পোশাকের মেলবন্ধনে শহর কলকাতা যে ওই রাতে সমৃদ্ধ হবে, তা বলাই যায়। গতবছরের দুর্দান্ত সাফল্যের পরে এবছর ফের কোমর বেঁধে তৈরি কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ।
আচ্ছা, বেনারসি শব্দটা শুনলেই আমাদের চোখের সামনে কী ভেসে ওঠে? ঝলমলে রঙিন শাড়ি পরা এক কনেবৌ। তার পিছু পিছুই ভাসে বিয়ের মণ্ডপ, কানে ভাসে সানাইয়ের সুর, নাকেও আসে সুখাদ্যের ঘ্রাণ। এই বেনারসি শাড়ি যেন এক ও একমাত্র বিয়েবাড়ির সঙ্গেই জড়িয়ে গেছে ওতপ্রোত ভাবে।
অথচ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটু এগিয়ে এলেই দিব্যি বোঝা যায়, বেনারসি কিন্তু মোটেই আর বিয়েবাড়িতে কনের শরীরে আটকে নেই। বিয়ের কনের জন্য বেনারসি– এ ধারণা পালটে গেছে কবেই! এখন যে কোনও উৎসব, সে বিয়েই হোক, বা অন্নপ্রাশন, রিসেপশনের রাত্তিরই হোক, বা অষ্টমীর সকালের অঞ্জলি, সমস্ত উদযাপনের সঙ্গেই খাপ খেয়ে যায় বেনারসি। আর সেই জন্যই ভারী কাজের সেকেলে নকশার বেনারসির পাশাপাশি ক্রমশই জনপ্রিয় হচ্ছে হালকা ওজনের ছিমছাম কাজের বেনারসিও।
বেনারসির সমস্ত মিথ ধাঁধিয়ে গেছে ফ্যাশনের আলোয়
কিন্তু এই ধারণা থেকে আরও কয়েক কদম এগিয়ে ভেবেছেন কেয়া শেঠ ও তাঁর সুযোগ্য কন্যা মিষ্টি শেঠ।। শুধু ভাবেননি, বলা যায় ইতিহাস গড়েছেন। সে ইতিহাস ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাঁদের কালীঘাটের নিজস্ব মল ‘কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ’-এ। এ মল জুড়ে শুধুই বেনারসির সম্ভার। আর তার বিবিধ রঙে-রূপে মুগ্ধ শুধু নয়, বিস্মিত হবেন যে কোনও কেউ!
মিষ্টি ইউকে থেকে ফ্যাশন ডিজাইনিং কোর্স করে এসেছেন। কিন্তু সেখানকার হাজারো সুযোগ ছেড়ে মিষ্টি দেশে ফিরেছেন, এ দেশে কাজ করবেন বলে, দেশের ঐতিহ্য নিয়ে বাংলায় কাজ করবেন বলে। তাই তো বেনারসির ঐতিহ্য আধুনিক ফ্যাশনের শিখর ছুঁয়েছে তাঁর সৃষ্টির ছোঁয়ায়।
বলতে গেলে, বেনারসি নিয়ে যুগের পর যুগ ধরে যে মিথ তৈরি হয়েছে মানুষের মনে, তাই ভেঙে ফেলেছেন মিষ্টি, যোগ্য সাপোর্ট জুগিয়েছেন মা কেয়া।তবে মিথ ভাঙা তো সহজ নয়। পাছে লোকে কিছু বলে! বিশেষ করে যে মিথ নির্মিত হয়েছে ট্র্যাডিশনের ওপর নির্ভর করে, তা ভাঙা আরওই কঠিন। সেটা ভাঙারই ‘স্পর্ধা’ দেখিয়েছেন কেয়া এবং মিষ্টি। এমনই সে স্পর্ধা, এমনই তার বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্য, যে চোখ মেলে দেখতে হয়। ঐতিহ্যপূর্ণ ভারী বেনারসি থেকে হাল্কা খাদি বেনারসির বিবর্তন দেখে মুগ্ধ হতে হয়।
বেনারসি কার্নিভাল
এমনই ৬০ রকমের, সংখ্যায় প্রায় ৪০ হাজার বেনারসি শাড়ির কালেকশন নিয়ে শুরু হয়েছে কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভের বেনারসি কার্নিভাল। কেয়া শেঠের এই বিশেষ কার্নিভাল সেজেছে, বেনারসি দিয়ে। ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এই কার্নিভাল, চলবে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। হাজারো বেনারসি দেখতে একবার পৌঁছে যেতেই পারেন ‘কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ’, কালীঘাটে। শুধু চোখের দেখা নয়, বেনারসি শাড়ি নিয়ে হাজারো তথ্যও জানে পারবেন কার্নিভালে। আর পছন্দ হলে তো সংগ্রহ করতেই পারবেন, যে কোনও ধরনের বেনারসি। তবে শুধু শাড়ি নয়, সম্ভারে রয়েছে বেনারসি দিয়ে তৈরি নানান ইন্দো-ওয়েস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন পোশাকও। রয়েছে বেনারসি দিয়ে তৈরি ছেলেদের পোশাকও। বেনারসি নিয়ে এই অভিনব কার্নিভালে সকলকে স্বাগত।
কিন্তু শুধু কার্নিভাল নয়, অভিনব ফ্যাশন শো এই কার্নিভালের মূল ইউএসপি। এমন এক ফ্যাশন শো, যা সচরাচর দেখা যায় না। ওয়েস্টার্ন পোশাকের ওপর ফ্যাশন শো তো কতই দেখেছেন, দেখেছেন দেশীয় ফ্যাশনও। কিন্তু প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্য সবটা মিলেমিশে যাচ্ছে বেনারসির মতো এক দুর্দান্ত ফ্যাব্রিকের দ্বারা, এমন অভিনব এ সুবিশাল মাপকাঠির ফ্যাশন শো, কার্যত বিরল ও স্বতন্ত্র।
ফ্যাশন শো দেখতে গেলে আপনাকে যা করতে হবে
৯০০৭৩০৮০০৩ নম্বরে একটি হোয়াটসঅ্যাপ করে নিশ্চিত করতে হবে আপনার যাওয়া। তার পরে, ৫ ডিসেম্বর রাত আটটার মধ্যে কালীঘাটের কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ মলের রুফটপে পৌঁছে গেলেই হবে। ঠিকানা: ১১৬এ, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী রোড, কালীঘাট, কলকাতা ৭০০০২৬। সময়মতো পৌঁছে গিয়ে গ্রহণ করুন আপনার আসন। আর সাক্ষী হোন, এ শহরের সেরা ফ্যাশন কার্নিভালের, সেরা ফ্যাশন শোয়ের। অনুষ্ঠানের সবটুকু নিখুঁত হাতে সাজিয়েছেন খোদ কেয়া শেঠ ও মিষ্টি শেঠ।