
দ্য ওয়াল ব্যুরো : নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য শুক্রবার সকাল থেকেই দিল্লিতে ঢুকতে চেষ্টা করেন হাজার হাজার কৃষক। হরিয়ানা সীমান্তে তাঁদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ মিছিল ছত্রভঙ্গ করার জন্য কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, জলকামান ব্যবহার করে। দুপুরে দিল্লি পুলিশ ঘোষণা করে, মিছিল শহরে ঢুকতে দেওয়া হবে। রাজধানীর উপকণ্ঠে বুরারি অঞ্চলে সভা করে কৃষকরা বিক্ষোভ দেখাবেন। পুলিশ মিছিলকে ঘিরে বুরারি পর্যন্ত পৌঁছে দেবে।
মিছিল আটকাতে দিল্লি সীমান্তে পুলিশ এদিন ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। রাজধানীতে ঢোকার রাস্তাগুলো ব্যারিকেড করে দেয়। কোথাও কাঁটা তারের বেড়া দেওয়া হয়। হরিয়ানার দু’টি জায়গায় পুলিশ রাস্তা কেটে দেয়। কৃষকদের অভিযোগ, তাঁদের দিল্লিতে ঢোকার অনুমতি দেওয়ার পরেও পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। জলকামান চালিয়েছে। সিংঘু অঞ্চলে কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন।
শুক্রবার হরিয়ানার কয়েকটি অঞ্চলে পুলিশের সঙ্গে কৃষকদের পাঁচঘণ্টা সংঘর্ষ চলে। পুলিশ মিছিল আটকাতে রাস্তা জুড়ে বালিভর্তি ট্রাক দাঁড় করিয়ে দেয়। পুলিশের বক্তব্য, করোনা অতিমহামারীর সময় দিল্লিতে এত লোক ঢুকতে দেওয়া উচিত নয়। দিল্লির পুলিশ অফিসার গৌরব শর্মা বলেন, আমরা দিল্লির বাসিন্দাদের প্রাণ বিপন্ন করতে পারি না। অন্যদিকে কৃষক নেতারা প্রশ্ন তোলেন, কোভিড গাইডলাইন কি শুধু আমাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? বিহারে ভোটের বেলায় ওই নির্দেশিকা প্রযোজ্য হল না কেন? সংসদে সরকার বিতর্কিত আইন পাশ করাল কেন? অনেক কৃষক বলেন, আমরা কোভিডকে ভয় পাই না। নতুন কৃষি আইন করোনার চেয়েও খারাপ।
শুক্রবার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং কেন্দ্রীয় সরকারকে বললেন, এখনই সরকার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসুক। তাঁর কথায়, “কেন্দ্রীয় সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দিক। তারা চাষিদের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাওয়ার অধিকার স্বীকার করে নিক। কারণ তা প্রত্যেক কৃষকের মৌলিক অধিকার।” একটি মহল থেকে অভিযোগ তোলা হয়, অমরিন্দর সিং কৃষকদের আন্দোলনে নামতে প্ররোচনা দিয়েছেন। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাঁরা বলছেন কংগ্রেস কৃষকদের প্ররোচনা দিচ্ছে, তাঁরা খেয়াল করছেন না, লক্ষ লক্ষ কৃষক এখন দিল্লিতে ঢোকার চেষ্টা করছেন। কৃষকরা তাঁদের জীবন ও জীবিকার জন্য লড়াই করছেন। এখানে কারও প্ররোচনা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।”
কৃষকদের গ্রেফতার করে আটকে রাখার জন্য শহরের ন’টি স্টেডিয়ামকে অস্থায়ী জেল বানাতে চেয়েছিল দিল্লি পুলিশ। কিন্তু তাদের অনুমতি দেয়নি আম আদমি পার্টির সরকার।
আপের বিধায়ক তথা সর্বভারতীয় মুখপাত্র রাঘব চাড্ডা শুক্রবার টুইট করে বলেন, প্রতিবাদ জানানোর অধিকার সকলেরই আছে। আমরা দিল্লির স্টেডিয়ামগুলিকে জেল বানাতে দিতে রাজি নই। আপের অপর মুখপাত্র সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, “পুলিশকে অনুমতি দিলে তা অত্যন্ত অমানবিক কাজ হত।”