
দ্য ওয়াল ব্যুরো : মহারাষ্ট্রে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। শুক্র ও শনিবার দৈনিক আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজারের বেশি। এই পরিস্থিতিতে শনিবার শহরের মেয়র কিশোরী পেডনেকর মানুষকে সতর্ক করে বললেন, যদি সংক্রমণ না কমে এবং যথাযথ সতর্কতা না মেনে চলা হয়, তিনি ফের লকডাউন করবেন। সুতরাং লকডাউন এড়াতে চাইলে মুম্বইয়ের বাসিন্দারা যেন কঠোরভাবে করোনা সতর্কতা মেনে চলেন।
মুম্বইবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, “আপনারা যদি করোনা ঠেকাতে সতর্ক না হন, সংক্রমণ যদি বাড়তেই থাকে, তাহলে লকডাউন করতে হবে। যদি তা না চান, করোনা বিধি মেনে চলুন।”
মেয়র বলেন, বাণিজ্যনগরী মুম্বইতে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। বৃহন্মুম্বই কর্পোরেশন সংক্রমণ ঠেকাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ে মানুষকে সচেতন করার জন্য মেয়র এদিন শহরের রাস্তায় মাস্ক বিলি করেন।
শুক্রবার মহারাষ্ট্রে নতুন করে করোনা সংক্রমিত হন ৬১১২ জন। রোগমুক্ত হয়েছেন ২১৫৯ জন। মারা গিয়েছেন ৪৪ জন। এদিন মুম্বইতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৯৭ জন। আমাদের দেশে মহারাষ্ট্রেই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। সেখানে করোনা কিছু পরিমাণে কমেছিল। কিন্তু তিন মাস পরে ফের রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ৬ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহারাষ্ট্রে করোনার কয়েকটি নতুন মিউটেশন হয়েছে। সেজন্যই বেড়েছে সংক্রমণ।

সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বা বিএমসি-র কমিশনার ইকবাল সিং চাহাল একটি নির্দেশিকায় জানিয়েছেন বিয়েবাড়ি ও জমায়েত নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। বিএমসি জানিয়েছে, লোকাল ট্রেনে ৩০০ মার্শাল নিযুক্ত করা হয়েছে। কোনও যাত্রী মাস্ক ছাড়া যাত্রা করলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিয়েবাড়ি, ক্লাব, রেস্তোরাঁ প্রভৃতি জায়গায় ঠিকভাবে কোভিড বিধি মেনে চলা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও বিল্ডিংয়ে পাঁচজনের বেশি কোভিড রোগী থাকলে সেই বিল্ডিং সিল করে দেওয়া হবে। যারা এই নিয়ম মানবে না তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
রাজ্যের দুটি জেলা অমরাবতী ও ইয়াবতমালে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার পর্যন্ত লকডাউন থাকবে অমরাবতীতে। সেখানে বাজার, সুইমিং পুল, ইনডোর গেম বন্ধ করা হয়েছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পাঁচজনের বেশি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। ইয়াবতমালে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেস্তোরাঁ ও বিয়ে বাড়িতে ৫০ শতাংশের বেশি উপস্থিতি যাতে না থাকে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোথাও পাঁচজনের বেশি জমায়েত করা যাবে না বলেই জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, “মহারাষ্ট্রের মতোই পাঞ্জাবেও হঠাৎ করে গত সাতদিন ধরে দৈনিক সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৩৮৩ জন নতুন আক্রান্ত হয়েছেন। একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে কেরল, ছত্তিসগড় ও মধ্যপ্রদেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় মধ্যপ্রদেশে নতুন আক্রান্ত ২৯৭। অন্যদিকে ছত্তিসগড়ে নতুন করে ২৫৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন।”