
দ্য ওয়াল ব্যুরো : বৃহৎ ফরাসি বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থা টোটাল এস ই-র কাছে নিজের পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি উৎপাদন ব্যবসার একাংশ বেচে দিলেন ধনকুবের গৌতম আদানি। এভাবে তিনি তুলেছেন ২৫০ কোটি ডলার। টাকার অঙ্কে তার মূল্য ১৮ হাজার ২৯৬ কোটি ৮৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। টোটাল এস ই-র সদর দফতর প্যারিসে। তারা আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের ২০ শতাংশ কিনে নিয়েছে। এছাড়া আদানির সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদক অপর একটি সংস্থারও ৫০ শতাংশ কিনে নিয়েছে ওই ফরাসি সংস্থা। ব্লুমবার্গ নিউজ সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
গত বছর মুম্বইয়ে আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের শেয়ারের দাম বেড়েছে চার গুণ। ফলে বাজারে ওই কোম্পানির মূল্য এখন ২ হাজার কোটি ডলার বা প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। গতবছর ভারতের ধনীতম ব্যক্তি মুকেশ আম্বানি তাঁর প্রযুক্তি ও খুচরো ব্যবসায় ফেসবুক, গুগলের মতো সংস্থার বিনিয়োগ এনেছেন। তার মূল্য প্রায় ২৭০০ কোটি ডলার। এখন ভারতের তিনটি ক্ষেত্র বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। সেগুলি হল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও মোবাইল ডাটা।
১৯৮৮ সালে নানা পণ্যের ব্যবসায়ী হিসাবে আদানি গ্রুপের জন্ম হয়। ক্রমশ তা দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি পোর্ট অপারেটর এবং পাওয়ার জেনারেটর সংস্থা হয়ে ওঠে। ২০১৯ সালে আদানি গ্রুপ বিমান বন্দরের ব্যবসায় নামে। জিভিকে গ্রুপের থেকে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের ৭৪ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয় আদানি গোষ্ঠী। এয়ারপোর্টস কোম্পানি সাউথ এশিয়া এবং বিডভেস্ট গ্রুপের থেকে কেনে আরও ২৩.৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে মুম্বই বিমান বন্দরের প্রায় ৭৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক হয়েছে শিল্পপতি গৌতম আদানির আদানি গ্রুপ। বর্তমানে ওই গোষ্ঠী দেশের বৃহত্তম প্রাইভেট এয়ারপোর্ট অপারেটর। ।
এর আগে আদানি জাহাজ বন্দরের ব্যবসায় সফল হয়েছেন। গুজরাতে দেশের বৃহত্তম বন্দরের দায়িত্ব পেয়েছে তাঁর সংস্থা। তাছাড়া অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রক থেকে ওই গ্রুপ ছ’টি বিমান বন্দরের কন্ট্রাক্ট লাভ করেছিল। বিমান বন্দরগুলি পাবলিক-প্রাইভেট মডেলে চালানো হবে।
কিছুদিন আগে সিবিআই অভিযোগ করে, জিভিকে গ্রুপ ৭০৫ কোটি টাকা তছরুপ করেছে। এর ফলে সরকারের ক্ষতি হয়েছে ৩১০ কোটি টাকা। জিভিকে গ্রুপের আর্থিক অবস্থা এখন ভাল নয়। তাই তারা দেশের মুম্বইয়ে দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমান বন্দরের শেয়ার আদানি গোষ্ঠীর কাছে বেচে দিল।
আদানি গ্রুপ এর আগে ছ’টি নন মেট্রো এয়ারপোর্টে পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল। আদানি এন্টারপ্রাইজেস তার অ্যানুয়াল রিপোর্টে বলেছিল, তারা দেশের সর্ববৃহৎ এয়ারপোর্ট ডেভলপার হতে চায়। সেজন্য তারা বিমান বন্দরে পরিকাঠামোর উন্নতি করবে। যাত্রীদের জন্য তৈরি করবে এয়ারপোর্ট ভিলেজ, হোটেল এবং মল।
একইসঙ্গে আদানি গোষ্ঠী সিদ্ধান্ত নেয়, দেশের অভ্যন্তরে বিমান চলাচল বাড়ানো হবে। নতুন নতুন গন্তব্যের উদ্দেশে বিমান চালাতে হবে। বিভিন্ন পাশ্চাত্য দেশে ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেও বিমান চলাচল বাড়াতে হবে।