
দ্য ওয়াল ব্যুরো: উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের নৃশংস গণধর্ষণ ও খুন নিয়ে সারা দেশ উত্তাল। যোগীরাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সারা দেশ। অথচ সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে উত্তরপ্রদেশের সরকার জানিয়ে, দিয়েছে তরুণীর ধর্ষণই হয়নি। স্রেফ রাজ্য সরকারে বদনাম করতে ও হিংসা ছড়াতেই ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।
শীর্ষ আদালতে হাথরাস নিয়ে জনস্বার্থ মামলা রুজু করেছেন সমাজকর্মী সত্যমা দুবে। সেই মামলার শুনানিতে আজ বিচারপতি বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ হাথরসের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত অস্বাভাবিক’ (ভেরি এক্সট্রাঅর্ডিনারি) এবং সাংঘাতিক (হরিবল) বলে আখ্যা দেয়, পাশাপাশি সুবিচারের আশ্বাসও দেন তাঁরা। সেই সঙ্গে নির্যাতিতার পরিবার ও এই ঘটনার সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও উত্তরপ্রদেশ সরকারকে বিশেষ ভাবে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা।
সরকার পক্ষের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছেন, অনেকেই নিজের স্বার্থে মিথ্যে রটিয়ে হাথরসের তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করছে। কিন্তু ২০ বছরের এক তরুণীর এমন দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর ঘটনাকে স্বার্থের কারণে উত্তেজনাপূর্ণ করে তোলা ঠিক নয়।
নিরপেক্ষ ও বাধাহীন তদন্তের আশ্বাস দিয়ে বিচারপতি বোবদে এদিন শুনানিতে বলেন, “উত্তরপ্রদেশ সরকারকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, হাথরসের সাক্ষীদের কী ভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। সেখানে উল্লেখ করতে হবে, নির্যাতিতার পরিবার কোনও আইনজীবী নিযুক্ত করেছেন কিনা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হাথরসের নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের নিয়মিত হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে প্রথম থেকেই। কিছু ভিডিও ফুটেজে এই ঘটনার সপক্ষে প্রমাণও পাওয়া গেছে। মৃতার পরিবার যাতে কিছু বলতে না পারেন, সে জন্যই জোর করে নিহত তরুণীর দেহ পুড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। আদালতে আজ সরকারি হলফনামায় এর ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বলেই জেলা প্রশাসনকেও অস্বাভাবিক বন্দোবস্ত করতে হয়েছিল। মধ্যরাতে দাহ করা হয়েছিল নির্যাতিতার দেহ।
তবে হাথরস কাণ্ডে ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হস্তক্ষেপ করেছে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। সেখানে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের তলব করা হয়েছে ১৪ অক্টোবর। এ দিন সুপ্রিম কোর্টের জনস্বার্থ মামলার শুনানিতেও প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, এক্ষেত্রে ইলাহাবাদ হাইকোর্টে না গিয়ে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে মামলা কেন?
এর জবাবে মামলাকারীর পক্ষে আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ বলেন, এই মামলার তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। তাই তাঁরা চান, উত্তরপ্রদেশ সরকারের এক্তিয়ারের বাইরে কোনও আদালতে মামলা সরানো হোক।