
দ্য ওয়াল ব্যুরো : শুক্রবার হংকং-এ ৮১ জন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। নতুন করে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে আশঙ্কা করে কোউলুন উপদ্বীপের একটা অংশ পুরোপুরি লকডাউন করে দেয় নগর প্রশাসন। সেখানকার ১০ হাজার বাসিন্দাকে বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করা হয়। সরকার জানায়, তাঁদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করা হবে।
করোনা অতিমহামারী শুরুর পর থেকে এই প্রথমবার হংকং-এ এত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হল। যে এলাকায় লকডাউন করা হয়েছে, তা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। সেখানে অনেক ফ্ল্যাটে একাধিক পরিবার বাস করে। এই পরিস্থিতিতে ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে।
সরকার জানিয়েছে, লকডাউন হওয়া এলাকায় ৭০ টি বিল্ডিং আছে। জায়গাটা ইন্টারন্যাশনাল কমার্স সেন্টারের কাছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সকলের করোনা টেস্ট করা হবে। তার পরে সেখানকার মানুষ বাইরে বেরোতে পারবেন। কাজেকর্মেও যেতে পারবেন।
একটি সূত্রে খবর, কোউলুন এলাকায় করোনা পরীক্ষার জন্য ৫০ টি অস্থায়ী কেন্দ্র গঠন করা হয়েছে। সেখানে কাজ করছেন ৩ হাজার সিভিল সার্ভেন্ট। পুরো এলাকা কর্ডন করে ফেলা হয়েছে। নগর প্রশাসন জানিয়েছে, করোনার ভয়ে ওই এলাকার স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছিল। মানুষের উদ্যোগ দূর করার জন্যই সকলের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
শনিবার স্থানীয় সময় বেলা একটার মধ্যে কর্ডন করা অঞ্চলের তিন হাজার মানুষকে পরীক্ষা করা হয়েছে।
ভারত সহ কোনও কোনও দেশে করোনার প্রকোপ কমলেও সামগ্রিকভাবে বিশ্বে করোনা অতিমহামারী শেষ হওয়ার লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি। এরই মধ্যে ব্রিটেনে পাওয়া করোনার নতুন স্ট্রেন চিন্তা বাড়িয়েছে। এই স্ট্রেনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যুহার সাধারণ কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহারের থেকে বেশি হতে পারে বলেই জানিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
গত শুক্রবার ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা জানান জনসন। আগে বলা হয়েছিল এই ভাইরাস কোভিড-১৯-এর থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। এবার এই ভাইরাসের মারণ ক্ষমতা বেশি বলেও জানান জনসন। সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
সাংবাদিকদের সামনে ইংল্যান্ডের চিফ সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজর প্যাট্রিক ভ্যালান্স একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বোঝান। তিনি বলেন, ইংল্যান্ডে ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক ১০০০ কোভিড-১৯ আক্রান্তের মধ্যে হয়তো ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট হলে ১৩ থেকে ১৪ জনের মৃত্যু হত। অর্থাৎ মৃত্যুহার ৩০ শতাংশ বাড়ল।
কেন মৃত্যুহার বাড়তে পারে তার কোনও ব্যাখা ভ্যালান্স দেননি। তবে এই তথ্য জানা গিয়েছে ব্রিটেন সরকারের নিউ অ্যান্ড এমারজিং রেসপিরেটরি ভাইরাস থ্রেটস অ্যাডভাইজরি গ্রুপের একটি সমীক্ষার মাধ্যমে। ভ্যালান্স জানিয়েছেন, সব তথ্য এখনও প্রাইমারি পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, “আমি বলতে চাই, এই সংখ্যায় এখনও অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে। তাই আমাদের এই বিষয়ে আরও অনেক গবেষণা প্রয়োজন। তবে এটা নিশ্চিত এই নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে তার মারণ ক্ষমতাও অনেক বেশি।”