
দ্য ওয়াল ব্যুরো : জেফ বেজোস বনাম মুকেশ অম্বানী। অ্যামাজন ডট কম ইনকর্পোরেটেড বনাম রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ভারতের এক হাজার কোটি ডলার অর্থাৎ প্রায় ৭৮ লক্ষ কোটি টাকার খুচরো পণ্যের বাজারের দখল নেওয়ার জন্য জোর লড়াই চলছে বিশ্বের দুই শীর্ষস্থানীয় ধনকুবেরের সংস্থার মধ্যে। সেই লড়াই গড়িয়েছে হাইকোর্ট পর্যন্ত। এবার আদালতে উঠল ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রসঙ্গ।
খুচরো বাজার নিয়ে প্রতিযোগিতায় মুকেশ অম্বানী ফিউচার গ্রুপের সম্পদ কিছু পরিমাণে কিনতে চান। তাতে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তাঁর সুবিধা হবে। কিন্তু অ্যামাজনের দাবি, ফিউচার গ্রুপ এভাবে রিলায়েন্সকে তার সম্পত্তি বেচতে পারে না। কারণ আগে থেকেই অ্যামাজনের সঙ্গে ফিউচার গ্রুপের চুক্তি আছে যে, তারা কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাকে কিছু বেচতে পারবে না। ফিউচারের বিরুদ্ধে অ্যামাজন অভিযোগ করেছে দিল্লি হাইকোর্টে। আদালত এখন খতিয়ে দেখছে আমেরিকার ই-কমার্স কোম্পানি অ্যামাজনের আপত্তি তোলার আইনসঙ্গত কারণ আছে কিনা। আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রায় দেবেন বিচারপতিরা।
এই মামলা প্রসঙ্গেই উঠেছে ‘ফরেন ভার্সেস লোকাল’ বিতর্ক। ফিউচার গ্রুপের এক আইনজীবী আদালতে বলেন, “আমেরিকায় অ্যামাজন হল বিগ ব্রাদার। তারা ভারতে একটি ছোট কোম্পানিকে ধ্বংস করতে চায়।” অন্যদিকে একটি রিটেলার লবি গ্রুপ আবেদন জানিয়েছে, বিদেশি সংস্থা অ্যামাজনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশি সংস্থা ফিউচারকে সমর্থন করুন।
অ্যামাজন চায় ভারতের আদালত ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিউচারকে চুক্তি মেনে চলতে বাধ্য করুক। যদি ফিউচারকে চুক্তিভঙ্গ করতে দেওয়া হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক মহলে বিনিয়োগকারীদের কাছে বার্তা যাবে যে, ভারতে বিনিয়োগ করা ঝুঁকিবহুল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চাইছেন, ভারতে আরও বেশি সংখ্যক বিদেশি সংস্থা বিনিয়োগ করুক। তবেই দেশে কর্মসংস্থান হবে। কোভিড অতিমহামারীর ধাক্কা সামলে উঠবে ভারত।
রিলায়েন্স ইতিমধ্যেই ভারতে সবচেয়ে বড় খুচরো বিক্রেতা সংস্থা। এদেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনও দোকান থেকেই কেনাকাটা করতে ভালবাসেন। রিলায়েন্স যদি ফিউচার গ্রুপের কিছু সম্পত্তি কিনে নিতে পারে, তাহলে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনেকদূর এগিয়ে থাকবে তারা। অ্যামাজন তা চায় না। ইদানীং ভারত ও চিনের কয়েকটি সংস্থা তাদের দেশের বাজারে অ্যামাজনকে কোণঠাসা করার জন্য জাতীয়তাবাদের কথা তুলেছে। অ্যামাজন কিন্তু এই দেশগুলির কোটি কোটি ক্রেতাকে অত সহজে হাতছাড়া করতে রাজি নয়।