
দ্য ওয়াল ব্যুরো : মঙ্গলবার কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলের একাংশ ঐতিহাসিক লালকেল্লায় ঢুকে পড়ে। ওই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে গায়ক-অভিনেতা দীপ সিধুর। কৃষক নেতারা তাঁকে বলেছেন ‘গদ্দার’। পুলিশ তাঁর নামে মামলাও করেছে। বুধবারই কোনও অজ্ঞাত স্থান থেকে ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। তাতে গায়ক বলেছেন, “আমাকে যদি গদ্দার বলা হয়, তাহলে সব কৃষক নেতাই গদ্দার।”
কৃষক নেতাদের প্রতি দীপ সিধুর প্রশ্ন, ” যদি বলেন, আমি একাই লক্ষ লক্ষ কৃষককে উস্কানি দিয়েছি, তাহলে আপনারা কেমন নেতা? আরএসএস-বিজেপির কোনও লোক কি লালকেল্লায় নিশান সাহিব পতাকা লাগাতে পারে? আপনারা লক্ষ লক্ষ কৃষককে গদ্দার বলছেন।” দীপ সিধুর অভিযোগ, কৃষক নেতারা পিছু হটছেন।
দিল্লি পুলিশে সন্ত্রাসদমন শাখা এখন নানা ভিডিও ক্লিপ খতিয়ে দেখছে, মঙ্গলবার লালকেল্লার ভিতরে ঠিক কী হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এদিন দিল্লির সুশ্রুত ট্রমা সেন্টার ও তীর্থরাম হাসপাতালে যান। দিল্লির হিংসায় যে পুলিশকর্মীরা আহত হয়েছিলেন, ওই দুই হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা হচ্ছে। অমিত শাহ খোঁজ নেন তাঁরা কেমন আছেন।
এদিন জানা গিয়েছে, জানুয়ারির শুরুতে পুলিশ ‘শিখস ফর জাস্টিস’ নামে আমেরিকার এক সংগঠনের বিরুদ্ধে মামলা করে। কৃষক আন্দোলনের সময় ওই নিষিদ্ধ সংগঠনটি ঘোষণা করেছিল, যদি কেউ লালকেল্লায় পতাকা লাগাতে পারে, তাহলে পুরস্কার দেবে।
পুলিশ বুধবার সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা দর্শন পালের উদ্দেশে নোটিশ পাটিয়েছে। অভিযোগ, তিনি ট্র্যাক্টর মিছিলের সময় পুলিশের নির্ধারিত পথ দিয়ে যাননি। বুধবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, “যারা উস্কানি দিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লালকেল্লায় যেভাবে তেরঙা পতাকার অবমাননা করা হয়েছে, দেশ তা মেনে নেবে না।” কংগ্রেসকে দোষ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়।
এর আগে দীপ সিধু ফেসবুকে পোস্ট করে বলেন, তাঁরা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেননি। প্রতীকী প্রতিবাদ হিসাবে ‘নিশান ই সাহিব’ পতাকা লাগিয়েছিলেন।
তাঁর কথায়, “আমরা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানানোর জন্য নিশান সাহিব ও কৃষক সংগঠনের পতাকা লাগিয়েছিলাম। জাতীয় পতাকার অবমাননা করিনি। আমরা কিষাণ-মজদুর একতা নিয়ে স্লোগানও দিয়েছিলাম।”
লালকেল্লার ঘটনার সমর্থনে দীপ সিধু বলেন, গণ আন্দোলনে ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ দেখা যেতেই পারে। যখন মানুষের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, তখন সে রাগবেই।
অভিনেতার দাবি, বিক্ষোভকারীরা কোনও সম্পত্তির ক্ষতি করেননি। তাঁর কথায়, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছি।”