
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সারা বিশ্বের প্রতিটি যখন লড়াই করছে নিজের দেশের যত বেশি সম্ভব মানুষকে কোভিডের টিকা প্রয়োগ করার জন্য, তখন ভারতে দেখা গেছে অন্য সমস্যা। অসংখ্য টিকা বাড়তি। নেওয়ার লোক নেই। প্রত্যাখ্যান করছেন বহু মানুষ। এমনই চিত্র সামনে এল সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষার রিপোর্টে।
তথ্য বলছে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জনসংখ্যার দেশগুলির মধ্যে ভারত একটি। এ দেশের টিকাকরণের দিকে তাকিয়ে রয়েছে আরও অনেক দেশই। অথচ প্রাথমিক পর্যায়ে যে জরুরি কর্মীদের টিকাকরণ শুরু হয়েছে, তাতেই টিকা নিতে নারাজ হচ্ছেন অনেকেই। কারণ এখনও পর্যন্ত টিকার নিরাপত্তার দিকটি সুনিশ্চত করে ওঠা যায়নি বলেই মত তাঁদের।
পরিকল্পনা ছিল, জুলাই মাসের মধ্যে অন্তত ৩০ কোটি মানুষকে কোভিড টিকা দেওয়া হবে ভারতে। কিন্তু যে হারে টিকাকরণ এগোচ্ছে, তাতে এই আশা আর খুব বেশি দেখছে না সরকার। পাটনার এইমসের চিকিতসক বিনোদ কুমার যেমন বলছেন, “এখানে অন্তত চল্লিশ শতাংশ ডাক্তার এখনই টিকা নিতে চাইছেন না। তাঁরা অপেক্ষা করে নিশ্চিত হতে চাইছেন নিরাপত্তার দিকটি। এ দেশে এমনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় চিকিতসকের সংখ্যা অনেক কম। তার মধ্যে তার একটা বড় অংশ যদি টিকা না নেন, তবে তা বিপদ বাড়াবে বই কমাবে না।”
বস্তুত, ভ্যাকসিনেশন শুরু হওয়ার পরে এর নানাকিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সামনে এসেছে। মৃত্যুও হয়েছে কয়েকজনের। যদিও মৃত্যুর কারণ যে ভ্যাকসিনই তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবু এর কার্যকারিতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা দেখা গেছে। সেই কারণে সরকারের তরফ থেকে যতই প্রচার করা হোক, একাংশের মানুষের মধ্যে দ্বিধা থেকেই গিয়েছে।
এর ফলে দেশে একটা বিপুল সংখ্যক টিকার ভাণ্ডার পড়ে রয়েছে, এমনটাই খবর সরকারি সূত্রে। এ দেশে যে দু’টি টিকা এখন দেওয়া হচ্ছে, তাদের মধ্যে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা এখনও শেষ হয়নি। তা সত্ত্বেও ওই টিকার ছাড়পত্র পাওয়া নিয়ে বিতর্ক হয়েছে যথেষ্ট। অন্যদিকে অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় শেষ হওয়া তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ছাড়পত্র পেয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে টিকার উপরে একশো শতাংশ ভরসা করতে পারছেন না বহু মানুষ। এমনিতেই এ দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এই সংক্রান্ত সচেতনতার অভাব আছে। এখনও পোলিও টিকা খাওয়ানোর জন্য প্রচার অভিযান চালাতে হয় বিভিন্ন এলাকায়। সেখানে একটি নতুন টিকা যে সহজে ভরসা অর্জন করতে পারবে না, তেমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। তার উপরে দেশের সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশই যখন রাজি হচ্ছেন না টিকা নিতে, তা যে সাধারণ মানুষের কাছেও নেতিবাচক বার্তা পৌঁছবে, সেটাই স্বাভাবিক।