
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চলার পরে ছাড় ইডি-র দফতর থেকে বেরোলেল সারদা কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ। এদিন সকাল সাড়ে দশটায় ইডির অফিসে পৌঁছে যান তিনি। বিকেল ৫:৪৫ নাগাদ বেরিয়ে এসে জানান, “ভিতরে কী প্রশ্ন করা হয়েছে, কী জবাব দিয়েছি তা বলব না। কারণ এটা নীতিগত ভাবে ঠিক নয়।”
এদিন ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে তিনি জানান, প্রথম দিন থেকে তদন্তে সহযোগিতা করে এসেছি, আজও সে চেষ্টাই করেছি। তাঁরা যা প্রশ্ন করেছেন আমি উত্তর দিয়েছি। তাঁর কথায়, “২০১৩ সাল থেকে আমি তদন্তে সহযোগিতা করছি। যখন যে তদন্তকারী এজেন্সি আমায় ডেকেছে, আমি গেছি। আমি জ্ঞানত কোনও অন্যায় করিনি। ভবিষ্যতেও আমায় ডাকা হলে আমি আসব। সম্ভবত পরের সপ্তাহে আমি আর একবার আসব।”
কুণাল ঘোষ আরও বলেন, “তদন্তের উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। ভয় এটাই থাকে, তদন্ত যদি রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত হয়। তবে সেটা বিচারসাপেক্ষ। তার আগে অবধি আমার তদন্তকারীদের নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। তবে আমি আশা করি, সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে যাঁদের নাম আছে, তাঁদেরও জেরা করা হবে।”
এর পরে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “কেউ বা কারা যদি মনে করেন এইভাবে আমায় প্রভাবিত করা যাবে, আমার উপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে, তাঁদের বলি, আমি বাঘছাল পরা বিড়াল নই। আর কুণাল ঘোষ যদি বেঁচে থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তি, যে অন্য দলে গিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে নানা কিছু, সেই জানোয়ার এবং রাস্কেলটাকে কলার ধরে জেলের ঘানি টানিয়ে ছাড়ব আমি।”
কয়েকদিন ধরেই কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠকে বলছেন তত্কাল বিজেপির এক নেতা তৃণমূলে যাঁরা সক্রিয় তাঁদের উপর চাপ বাড়াতে এজেন্সি দিয়ে এসব করাচ্ছেন।
সারদা মামলায় দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন কুণাল ঘোষ। এখন তিনি জামিনে মুক্ত। জেলবন্দি থাকা অবস্থায় তাঁকে আদালতে তোলার দিন থাকলেই নাজেহাল হতে হত পুলিশকে। প্রিজন ভ্যান থেকে বিস্ফোরক সব মন্তব্য করতেন প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও তোপ দাগতেন কুণাল। তাঁর কণ্ঠ ঢাকতে প্রিজন ভ্যানের টিন বাজাতে দেখা যেত পুলিশকে।
তবে কয়েক বছর আগে দিদির সঙ্গে দেখা হয় কুণালের সেই থেকে ফের চিড় ধরা সম্পর্ক জুড়তে শুরু করে। ২০১৯-এ একুশে জুলাইয়ের মঞ্চেও ছিলেন কুণাল। তারপর এখন তিনি শাসকদলের অন্যতম মুখপাত্র।
সূত্রের খবর, সম্ভবত আগামী ৮ মার্চ কুণাল ঘোষ আবার আসবেন ইডির দফতরে। জানা গেছে, ইতিমধ্যেই সারদা-কাণ্ডে বেশ কিছু নতুন তথ্য হাতে এসেছে ইডির। তার ভিত্তিতেই কুণাল ঘোষকে জেরা করতে চেয়েছিল ইডি।