
দ্য ওয়াল ব্যুরো : ফুসফুসে সংক্রমণের জন্য রাঁচির এক হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের। তাঁর ছেলে তেজস্বী যাদব ও পরিবারের আরও অনেকে এখন আছেন রাঁচিতেই। একটি সূত্রে জানা যায়, লালুর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় তাঁকে দিল্লির এইমসে নিয়ে যাওয়া হবে। আরজেডি নেতা তেজস্বীও সম্ভবত তাঁর সঙ্গে দিল্লিতে যাবেন।
পশুখাদ্য কেলেংকারি ও আরও কয়েকটি মামলায় লালু ঝাড়খণ্ডের জেলে বন্দি আছেন। জেলের মেডিক্যাল বোর্ডই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাঁকে দিল্লির এইমসে পাঠানো হবে। কিন্তু তার আগে নিম্ন আদালতের কোনও বিচারকের অনুমতি নিতে হবে জেল কর্তৃপক্ষকে। তেজস্বী জানিয়েছেন, তিনি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে কথা বলবেন যাতে তাঁর বাবার যথাযথ চিকিৎসা হয়। তাঁর কথায়, “আমরা চাই, আমার বাবার আরও ভাল চিকিৎসা হোক। তাঁর সব টেস্ট রিপোর্ট এলে ডাক্তাররা স্থির করবেন কীভাবে চিকিৎসা করা হবে। আমি নিজে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব।”
পরে তেজস্বী বলেন, “আগেই তাঁর হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁর কিডনির মাত্র ২৫ শতাংশ কাজ করে। তাঁর নিউমোনিয়া ধরা পড়েছে। তাঁর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।”
২০১৭ সাল থেকে জেলে বন্দি আছেন লালু। তাঁর অনুপস্থিতিতে আরজেডি-র শীর্ষ পদে রয়েছেন ৩১ বছর বয়সী তেজস্বী। শুক্রবারই তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ সরকারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর’ পোস্ট করলেই ব্যবস্থা নেবে বিহার সরকার।
এরপর নীতীশকে ‘দুর্নীতির ভীষ্ম পিতামহ’ বলে টুইটারে পোস্ট করেন তেজস্বী। তিনি লেখেন, ‘নীতীশ কুমারের নামে ৬০ টি দুর্নীতির অভিযোগ আছে। তিনি অপরাধীদের রক্ষা করেন। একটি অনৈতিক ও অসাংবিধানিক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। এখন বিহার পুলিশই মদ বিক্রি করে। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি, তিনি যেন আমাকে গ্রেফতার করেন।’
আরজেডি নেতা তেজস্বী এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি টুইটারে লেখেন, ‘বিহারে কারও প্রতিবাদ করার অধিকার নেই। কেউ সরকারের বিরুদ্ধে লিখলে তার জেল হয়। বিরোধী নেতাদের কাছেও কেউ অভিযোগ জানাতে পারেন না।’ পরে তেজস্বী লিখেছেন, ‘নীতীশজি, আমরা জানি আপনি খুব ক্লান্ত। কিন্তু আপনার লজ্জা তো থাকা উচিত।’
বৃহস্পতিবার তেজস্বীর ফোনে কথোপকথনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে অনেকের মনে হয়েছে, সরকারে না থাকলেও প্রশাসনের নানা স্তরে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে তেজস্বীর।
কিছুদিন আগে পাটনায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন শিক্ষকরা। তাঁদের সমর্থন জানাতে গিয়েছিলেন তেজস্বী। তাঁকে বলা হয়, শিক্ষকরা যেখানে অবস্থান করতে চেয়েছিলেন, সেখানে তাঁদের বসতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তেজস্বী সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যসচিব, পুলিশ প্রধান ও পাটনার জেলাশাসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। শিক্ষকদের ওই নির্দিষ্ট জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে দেওয়ার অনুমতি আদায় করেন আরজেডি প্রধান।