
ভারত আক্রমণ করতে পারে শুনেই পা কাঁপছিল পাক সেনাপ্রধানের, তাড়াতাড়ি বললেন, অভিনন্দনকে ছেড়ে দাও
দ্য ওয়াল ব্যুরো : অবিলম্বে ভারতের উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে মুক্তি দিতে হবে। না হলে আজ রাত ন’টার মধ্যেই আক্রমণ করবে ভারত। এমনই খবর ছিল পাকিস্তানের কাছে। কী পরিস্থিতিতে অভিনন্দনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, তার বর্ণনা দিয়েছেন পাকিস্তানেরই বিরোধী নেতা আইয়াজ সাদিক। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে তিনি এক ভাষণে জানিয়েছেন, ভারত আক্রমণ করতে পারে শুনে সবচেয়ে ভয় পেয়েছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া। তাঁর পা কাঁপছিল। তিনিই পাকিস্তানের প্রশাসনের কর্তাদের কাছে আবেদন জানান, অভিনন্দনকে ছেড়ে দেওয়া হোক।
গতবছর পুলওয়ামায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানকে হত্যা করে জঙ্গি সংগঠন জৈশ ই মহম্মদ। পরদিন পাকিস্তানে ঢুকে জৈশের ঘাঁটিতে বোমা ফেলে আসে ভারতের বায়ুসেনা। পাকিস্তানের একটি যুদ্ধবিমান ভারতে ঢুকে পড়লে তাকে তাড়া করেন অভিনন্দন। পাকিস্তান তাঁর বিমানটিকে গুলি করে নামায়। অভিনন্দন পাকিস্তানি সেনার হাতে বন্দি হন।
২০১৯ সালের ১ মার্চ পাকিস্তান তাঁকে ছেড়ে দেয়। তিনি ওয়াগা-আত্তারি সীমান্ত দিয়ে বাড়ি ফেরেন। গত বছর স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তাঁকে বীরচক্র দেন।
পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) দলের নেতা আয়াজ সাদিক বলেন, অভিনন্দন বন্দি হওয়ার পরে সেদেশের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি আধা সেনার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। কারণ তাঁদের কাছে খবর ছিল, ভারত যে কোনও সময় আক্রমণ করতে পারে। সেই বৈঠকে সেনাপ্রধানও উপস্থিত ছিলেন। ভারত আক্রমণ করতে পারে শুনে তাঁর পা কাঁপছিল।
তাঁর কথায়, “সেই মিটিং-এর কথা আমার মনে আছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শাহ মাহমুদ কুরেশি। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মিটিং-এ আসতে অস্বীকার করেন। কিছুক্ষণ পরে সেই ঘরে এলেন জেনারেল বাজওয়া। তাঁর কপালে ছিল বিন্দু বিন্দু ঘাম। আমি পরিষ্কার দেখলাম, তাঁর পা কাঁপছে।”
অভিনন্দন পাকিস্তানে বন্দি হওয়ার পরদিন থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে শুরু করে তাঁর রক্তাক্ত মুখের ছবি। সেখানে দেখা যায় বেশ কয়েকজন মারধর করছেন অভিনন্দনকে। পাক রেঞ্জার্সের তরফে বলা হয় তাঁরা ছিলেন পাকিস্তানের সাধারণ নাগরিক। জনরোষ থেকে বাঁচাতেই অভিনন্দনকে হেফাজতে নেয় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী।
এর পর পরই প্রকাশ্যে আসে আরও একটি ভিডিও। সেখানে দেখা যায় কালো কাপড়ে বাঁধা রয়েছে কম্যান্ডারের চোখ। অনুমান, পিছমোড়া করে বাঁধা রয়েছে হাতও। কিন্তু তখনও সৌজন্য দেখিয়েই ব্যবহার করেছেন অভিনন্দন।