
সঙ্ঘমিত্রা হালদার
বধির
আকাশ ফাটানো এক চিৎকার আমাকে
পাচ্ছে, তুমি দেখালে তখন ছিপি আঁটা দমবন্ধ এক ঘর
পায়ের কাছে ঝিমিয়ে থাকা একটা পাপোশ দেখালে তুমি
যখন ঝাঁঝরা হয়ে যাচ্ছি
রাগে, তুমি রাতের ভেতরে নেশাগ্রস্ত নক্ষত্র দেখালে
ভিখিরির ঠোঁটে আধখাওয়া আগুন দেখালে তুমি
ঘুমের ভিতরে ঢুকে আমাকে দেখালে
বিস্ফোরণে হাড়-মাংস আমার উড়তে ভুলে গেছে
সময় এক ছিলা
ঋণ: ইন্টারস্টেলার ছবি
তুমি হেঁটে আসছ কোন সুদূর পেরিয়ে ভবিষ্যৎ-এ
বর্তমান থেকে চির-অতীতের দিকে
অমল-পীড়ায় তোমার ঘর বাহির হয়ে আছে
তোমার পা মৃত-নদীর কঙ্কাল পেরিয়ে এসে পাথর
তুমি, কবেকার সে তুমি, এত বেশি স্বাধীন
ভাষার ছিলা বাঁকিয়ে ছিঁড়ে ফেলছ সময়
ভাসিয়ে দিচ্ছ জলেস্থলেঅন্তরীক্ষে
আলোর নভেল
১.
অন্ধকারে ঘরে ফেরো বলে তুমি পাখি
তালগাছ একা বলে তাকে কত প্রাচীন দেখায়
মুখ তুলে একটা কুকুর সেই থেকে তাকে পড়ছে
এমন দৃশ্যে যেন হৃদয় মন্থর হয়ে আসে
কবেকার ফিরতিপথ হেঁটে এসে ঢোকে
যেন জনপদে তাড়াহুড়ো কিছু নেই
দরজা পেরিয়ে ঘরে আসে একাকী কুকুর আর তার কান্না
২.
জানলা ধরে লতিয়ে উঠেছে গাছ
আমি তার সম্পর্ক জানি না
জানি না সে আলো কোথায় বিঁধেছে তাকে
গমধোয়া আলো বাঁকে এসে ঘুরে গেছে
যেভাবে ফকির মেশে লুপ্তপ্রায় দিগন্তের গ্রামে
জানিনা অন্ধ কোন আলোয় সে পথ চলে
নিজেই শুষেছে কিনা সব আলো
পথচারী দুচারজন আলোর ভিতরে নড়ে চড়ে
পড়তে জানলে আলোর বাদাম চলকে ওঠে সেই মুখে
৩.
এমন আলোয় চুরি করে পড়লে মন
হৃদয়ে কুচিয়ে রাখা তরিতরকারি,
নম্র হল ব্যথা
সব নিরাময় ছায়ার ভেতরে নিলে
আর রেখে গেলে রোদের নভেল
ঠোঁটে কোনও তিল নেই, সব হাসি জলে ধোয়া
দীর্ঘ হাঁটাহাঁটি করে তুমি তো তখন অন্য মানুষ
রোদের নভেল থেকে উঁকি মেরে দেখছ তোমাকে চিনেছে কিনা
সঙ্ঘমিত্রা হালদার মূলত কবিতা ও গদ্য লেখেন। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত কবিতার বই: একা এক উহ্য মুদ্রা, অনুপস্থিতির শব্দ, হে একটি সম্বোধন, দীর্ঘ-ঈ, নামানো রুকস্যাক।
গদ্যের বই: রন্ধনশালার শিস্।
বাড়াবাড়ি রকমে ভালোবাসেন- বই, গান আর জঙ্গল।