
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গলা টিপে স্ত্রীকে খুন করে, ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে, দেহটি রাস্তায় ফেলে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ল স্বামী। ঘটনা খাস কলকাতা শহরের। নারকেলডাঙার বাসিন্দা শাহরুখ আহমেদ এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সাংসারিক অশান্তির জেরে। আজ সকালেই প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় রাস্তার ধারের ঝোপ থেকে উদ্ধার হয় স্ত্রীর দেহ। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধরা পড়ল অভিযুক্ত। পুলিশি জেরায় খুনের কথা স্বীকারও করেছে সে।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ শুক্রবার সকালে প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় বানতলার কাছে এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। সেই কাণ্ডে বাসন্তী হাইওয়ে সংলগ্ন জীবনতলা থানার পুলিশ অভিযুক্ত শাহরুখকে গ্রেফতার করে আজ বেলার দিকে। জানা গেছে, নিহত মহিলা তার স্ত্রী, নাম হামা কামাল। আজ অভিযুক্তকে তোলা হবে আলিপুর আদালতে।
তদন্তে জানা গেছে, হামা ও শাহরুখের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বনিবনা হচ্ছিল না। তাদের ছ’বছরের একটি বাচ্চাও আছে। সম্প্রতি হামা নারকেলডাঙার বাড়ি ছেড়ে, যাদবপুরে বিক্রমগড়ে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করে এবং একটি বারে নর্তকী হিসেবে কাজও শুরু করে সে।
পুলিশি জেরায় শাহরুখ জানিয়েছে, স্ত্রীর আলাদা হওয়া ও বারে নাচ করা মেনে নিতে পারেনি শাহরুখ। সে পুলিশের কাছে দাবি করেছে, একাধিক পুরুষের সঙ্গেও হামার সম্পর্ক তৈরি হয়। এর পরে গতকাল, বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা হামাকে জোর করে যাদবপুর থেকে নারকেলডাঙার বাড়িতে নিয়ে যায় শাহরুখ। সে সময়ে হামার ফোনে বারবার ফোন আসা নিয়ে শুরু হয় ঝগড়া, অশান্তি।
বচসা বাড়তে বাড়তে একটা সময়ে হামার গলা টিপে ধরে শাহরুখ। পুলিশি জেরায় সে স্বীকার করেছে, তখনই গলা টিপে হামাকে মেরে ফেলে সে। এর পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে সে নারকেলডাঙা খালপাড়ে স্ত্রীর দেহ নিয়ে গিয়ে ইট দিয়ে থেঁতলে দেয় মাথা। তার পরে হামার দেহটি গাড়িতে করে তুলে প্রগতি ময়দান থানার বানতলার কাছে ফেলে দেয়।
গতকাল রাতেই নাকা চেকিংয়ের সময়ে একটি কালো গাড়ির সিটে রক্তের দাগ দেখতে পান পুলিশকর্মীরা। চালককে প্রশ্ন করতেই সে গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে এবং নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। সেই সুযোগে গাড়ির মধ্যে থাকা শাহরুখ আহমেদ পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দেয় নয়ানজুলির কাছে একটি বাঁশবনে। রাতের অন্ধকারে বিস্তর খোঁজাখুঁজির পরে শেষে আজ সেখান থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
কিছুক্ষণ জেরার পরে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় শাহরুখ। তাকে প্রগতি ময়দান থেকে উদ্ধার হওয়া সেই মহিলার ছবি দেখানো হলে, সেটি দেখেও সে স্বীকার করে ওই মহিলা তার স্ত্রী বলে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একটি খুনের অপরাধীকে ধরে ফেলা জেলা পুলিশের বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন সকলে।