
দ্য ওয়াল ব্যুরো : গত শুক্রবার যোগগুরু রামদেব সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন, পতঞ্জলির করোনিল যে কোভিড ১৯ নিরাময় করতে পারে তা প্রমাণিত। ওই সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন এবং সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়করি। রামদেবের ওই ‘ওষুধের’ কড়া সমালোচনা করে চিকিৎসকদের সংগঠন আইএমএ প্রশ্ন তুলেছে, খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী কীভাবে এক অবৈজ্ঞানিক পণ্যের হয়ে কথা বলছেন?
রামদেব দাবি করেছেন, করোনিলকে স্বীকৃতি দিয়েছে হু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অবশ্য টুইট করে জানিয়েছে, তারা কোভিডের চিকিৎসার জন্য কোনও প্রথাগত ওষুধকে স্বীকৃতি দেয়নি। আইএমএ-র বক্তব্য, হু স্বীকৃতি দিয়েছে বলে মিথ্যা দাবি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই এই দাবি করেছেন রামদেব। এক বিবৃতিতে আইএমএ বলেছে, সারা দেশ মন্ত্রীর কাছে জানতে চায়, তিনি ওই মিথ্যা দাবির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন কেন?
আইএমএ-র প্রশ্ন, “দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কীভাবে এই ধরনের অনৈতিক কাজ করতে পারেন? তিনি নিজে আধুনিক ডাক্তারি শিক্ষা পেয়েছেন। দেশের মানুষকে তিনি কীভাবে একটি অবৈজ্ঞানিক পণ্য গ্রহণ করার কথা বলতে পারেন?”
আইএমএ পরে বলেছে, করোনিল যদি করোনা ঠেকাতে পারে, তাহলে সরকার ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে কেন?
গত বছর দেশে কোভিডের সংক্রমণ যখন হু হু করে বাড়ছে, তখনই যোগগুরু রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলি করোনিল নামে ওষুধটি বাজারে আনে। ওষুধটিকে ‘ইমিউনিটি বুস্টার’ হিসাবে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। অর্থাৎ সরকার মেনে নেয়, ওই ওষুধে মানুষের দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শুক্রবার যোগগুরু করোনিল সম্পর্কে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। তাঁর দাবি পতঞ্জলি প্রথমবার করোনার ‘প্রমাণ নির্ভর’ ওষুধ বার করল।
যোগগুরুর দাবি, ওই গবেষণাপত্র করোনিল নিয়ে সব সন্দেহের অবসান ঘটাবে। তাঁর কথায়, “যখন আমরা করোনিল বাজারে এনেছিলাম, অনেকে প্রশ্ন তুলেছিল, এই ওষুধ আদৌ কার্যকরী হবে কিনা। ওষুধ তৈরিতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে কিনা, তাও অনেকে জানতে চেয়েছিল। অনেকে মনে করে, গবেষণা কেবল বিদেশেই হতে পারে। এই গবেষণার মাধ্যমে আমরা করোনিল সম্পর্কে সব সন্দেহ দূর করলাম।”
রামদেব বলেন, “বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল দেখে সরকার আমাদের সবুজ সংকেত দিয়েছে। আমরা আন্তর্জাতিক মাপকাঠি মেনে চলেছি। হু আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে। এখন আমরা বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণ সহ ১৫০ টি দেশে করোনিল বিক্রি করতে পারি।” হর্ষবর্ধন বলেন, “আয়ুর্বেদের ওপরে মানুষের বিশ্বাস বাড়ছে। মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সবরকমের ওষুধেরই সাহায্য নেওয়া উচিত।”