
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মির্জাপুর ওয়েব সিরিজের প্রথম সিজন রিলিজ করেছিল অনেক আগে। তার পরে গত বছর অক্টোবরে মুক্তি পেয়েছে মির্জাপুরের দ্বিতীয় সিজন। এবার হঠাতই এই দ্বিতীয় সিজনের বিরুদ্ধে নড়ে বসলেন এক শ্রেণির মানুষ। অভিযোগ তুললেন, ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হেনেছে এ সিরিজ। মির্জাপুরেরই এক বাসিন্দা অরবিন্দ চতুর্বেদী এই ওয়েব সিরিজের নির্মাতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও দায়ের করেন মির্জাপুরের কোতওয়ালি দেহাত পুলিশ স্টেশনে।
যদিও অনেকেই মনে করছেন, মির্জাপুর টু নিয়ে আচমকা এই অভিযোগ ওঠার পেছনে রয়েছে তাণ্ডব-বিতর্ক। কিছুদিন আগেই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম অ্যামাজন প্রাইমে মুক্তি পায় ওয়েব সিরিজ ‘তাণ্ডব’। সেই থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘনিয়ে ওঠে বিতর্ক। ধর্মের দোহাই দিয়ে তাণ্ডবের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে এই ওয়েব সিরিজে।
এই নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছে, কেউ তাণ্ডব-নির্মাতাদের মাথা কাটার নিদান দিয়েছেন, কেউ বা বলেছেন এ দেশে বাক-স্বাধীনতার অবকাশ ক্রমেই সংকীর্ণ হয়ে আসছে। এমনকি প্রকাশ্যে ক্ষমাও চাইতে বাধ্য হয়েছেন তাণ্ডবের পরিচালক, বাধ্য হয়েছেন কিছু দৃশ্যে বদল আনতেও। এর পর সেই অভিযুক্ত ওয়েব সিরিজের তালিকায় নাম উঠে গেল ‘মির্জাপুর টু’-এরও।
উত্তর প্রদেশের মির্জাপুর শহরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে এই সিরিজের মাধ্যমে এমন দাবি জানিয়ে শীর্ষ আদালতে দায়ের হয়েছে এক পিটিশন। কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে সিরিজের নির্মাতা এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে। এই মামলাতেই তাঁদের কাছ থেকে জবাব চেয়ে নোটিস জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। জবাবদিহি চাইল টিম মির্জাপুর টু ও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আমাজন প্রাইমের কাছে।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানা এবং অশালীনতা দেখানোর জন্য ভারতীয় সংবিধানের মোট তিনটি ধারায়- ২৯৫এ, ৫০৪ এবং ৫০৫ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ফারহান আখতার, রীতেশ সিধওয়ানি ও ভৌমিক কোন্ডালিয়ার বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে, তাণ্ডবের বিরুদ্ধেও হিন্দু দেবদেবীদের অবমাননা করার জন্য উত্তরপ্রদেশের পুলিশ মামলা দায়ের করেন পুরো টিমের বিরুদ্ধে। এটা একটা রাজনৈতিক থ্রিলার, যেখানে অভিনয় করেছেন সইফ আলি খান ও ডিম্পেল কাপাডিয়া। উত্তরপ্রদেশের সরকারের তরফ থেকে জানানো হয় যে, এই ওয়েব সিরিজে হিন্দুদের ধর্মীয় আবেগকে আঘাত করা হয়েছে।
কমপক্ষে তিনটি বিষয়ে মামলা করা হয়েছে তাণ্ডবের পুরো টিম, পরিচালক ও অভিনেতাদের বিরুদ্ধে। দাবি করা হয়েছে, এতে প্রধানমন্ত্রীর চরিত্রকে খুব খারাপভাবে দেখানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্র সরকারও জানান যে তাঁরা এই অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখবেন। এখন মির্জাপুর-বিতর্ক কতদূর গড়ায়, সেটাই দেখার।