
দ্য ওয়াল ব্যুরো : অর্থনীতিকে যদি বিকশিত হতে হয়, তাহলে ঢেলে সাজাতে হবে ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রকে। সোমবার এমনই মন্তব্য করলেন এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তি মুকেশ আম্বানি। এদিন সন্ধ্যায় একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ভারতে ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রের ব্যাপারে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। ওই ক্ষেত্রকে ঢেলে সাজাতে হবে। মাঝারি ও ছোট শিল্পকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে।”
মুকেশ আম্বানিকে প্রশ্ন করা হয়, অর্থনীতির কোন কোন ক্ষেত্রে তিনি নিজে জোর দিতে চান। মুকেশ তিনটি ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করেন। প্রথমত ভারতে তিনি গড়ে তুলতে চান ডিজিটাল সোসাইটি। যা আগে কেউ ভাবতেই পারেনি। দ্বিতীয়ত দেশের শিক্ষাক্ষেত্রকে চাঙ্গা করে তুলতে চান। তৃতীয়ত বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ফসিলের ওপরে নির্ভরশীলতা কমাতে চান।
মুকেশ আম্বানি এমন সময়ে ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রকে ঢেলে সাজানোর কথা বলেছেন যখন কোভিডের ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে অর্থনীতি। সোমবারই অর্থনীতির শোচনীয় অবস্থা নিয়ে ভারতকে সতর্ক করে দিয়েছে আইএমএফ। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনার ধাক্কা সামলে অনেক দেশের অর্থনীতি ক্রমশ চাঙ্গা হয়ে উঠছে। কিন্তু এশিয়ার মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ভারতের। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, চলতি আর্থিক বছরে ভারতের অর্থনীতি সংকুচিত হবে ১০.৩ শতাংশ। আইএমএফের হিসাবমতো বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, চিন, নেপাল, পাকিস্তান ও আরও পাঁচটি দেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়বে ভারতের অর্থনীতি।
অর্থনীতির এই হাল নিয়ে সরকারকে সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের প্রাক্তন প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু। তিনি বলেচ্ছেন, “দেশের অর্থনীতি এখন যেখানে পৌঁছেছে, কয়েক বছর আগেও কেউ ভাবতে পারেনি। তার জন্য আংশিকভাবে দায়ী কোভিড। এই অবস্থা থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। তথ্যকে অস্বীকার করলে চলবে না। যদি ভুল হয়ে থাকে, স্বীকার করতে হবে। ভুল সংশোধনের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ শুনতে হবে।”
এরই মধ্যে অবশ্য আশার কথাও শুনিয়েছে আইএমএফ। বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ভারতের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। তখন তার বিকাশ হবে ৮.৮ শতাংশ হারে। ভারতের অর্থনীতি আবার সবচেয়ে দ্রুত বিকশিত হবে।
গত সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন অর্থনীতিবিদ জেফ্রি ডি সাচস মন্তব্য করেন, করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে ভারত এখনও পর্যন্ত যে উদ্যোগ নিয়েছে, আগামী দিনে তার ডবল উদ্যোগ নিতে হবে। নইলে অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের সব চেষ্টাই হবে হবে ব্যর্থ।
সাচসের বক্তব্য, করোনার মোকাবিলায় শুধু ওষুধ দিয়ে কাজ হবে না। সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে সকলেই মাস্ক পরে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলে। যে কোনও জমায়েত নিষিদ্ধ করতে হবে। আরও বেশি বেশি টেস্ট করতে হবে। কীভাবে রোগী সংক্রমিত হয়েছেন তাও খুঁজে বার করতে হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় বাড়াতে হবে ব্যয়বরাদ্দ। নাহলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে ভারত। কোভিড রোগীর সংখ্যা হু হু করে বেড়ে যাবে।