
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শুভেন্দু অধিকারী যে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে পারেন সে ব্যাপারে সন্দেহ গত প্রায় এক মাস ধরে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছিল। শুক্রবার শুভেন্দু মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়া মাত্রই তাঁকে বিজেপিতে যোগ দিতে আহ্বান জানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়।
মুকুলবাবু বলেন, “শুভেন্দু তৃণমূল স্তর থেকে রাজনীতি করছে। গণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে উঠে এসে নেতা হয়েছে। ও আমাদের সঙ্গে এলে বাংলায় পরিবর্তনের আন্দোলন আরও জোরদার তথা শক্তিশালী হবে।” তাঁর কথায়, “শুভেন্দুর ব্যাপারে বিজেপির সর্ব ভারতীয় নেতৃত্ব অবগত রয়েছেন। যে হেতু ও গণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছে তাই ওঁর জনভিত্তি রয়েছে। আমি ওকে বিজেপিতে আহ্বান জানাচ্ছি।”
বস্তুত শুভেন্দুর ইস্তফা পত্রে তৃণমূলের অন্দর যেমন আন্দোলিত হয়ে গিয়েছে, তেমনই বাংলায় তামাম বিরোধী শিবির উচ্ছ্বসিত। তা সে বিজেপিই হোক বা বাম ও কংগ্রেসের নেতারা। কারণ, তাঁরা মনে করছেন, এর ফলে একুশের ভোটে তৃণমূল জবরদস্ত ধাক্কা খেতে পারে।
কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতার কথায়, “শুভেন্দু তৃণমূলের এমন নেতা যাঁর গোটা রাজ্য জুড়ে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এবং তিনি যে জনপ্রিয় এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। বাকিরা সবাই সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোয় আলোকিত। সেই জন্য দেখা যাবে ফিরহাদ হাকিমকে বলতে শোনা যায়, আমরাও সিঁড়ি বেয়ে উঠেছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সিঁড়ি তৈরি করে দিয়েছেন। আবার কেউ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই আমরা নেতা হয়েছি। কিন্তু শুভেন্দু তেমন নন। একই মত, অনেক বাম নেতার। প্রসঙ্গত, কেবল আজ নয়, ষোলো সালের ভোটের সময়েও বাম, কংগ্রেসের অনেক নেতা চেয়েছিলেন শুভেন্দু দল ছেড়ে তাঁদের সঙ্গে আসুক।”
অন্যদিকে বিজেপির আগ্রহ স্বাভাবিক ভাবেই বেশি। বাংলায় বিজেপির গ্রহণযোগ্য মুখের অভাব রয়েছে। তৃণমূল এখন উঠতে বসতে বলে যে বিজেপি মানে বহিরাগত। কিন্তু শুভেন্দুকে মুকুলবাবুরা যদি বিজেপিতে সামিল করাতে পারেন, তা হলে তৃণমূলের সেই অস্ত্র অনেকটাই ভোঁতা হয়ে যেতে পারে বলে তাঁদের মত। কারণ, সে ক্ষেত্রে বিজেপি বাংলায় নতুন মুখ পেতে পারে। যে মুখ জনপ্রিয়, যাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে, পরিশ্রমী এবং যাঁর গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে গোটা বাংলায়।
তবে মুকুলবাবুর আহ্বান নিয়ে শুভেন্দু বা তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতারা কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। বরং তাঁদের কথায়, রাজনীতিতে ধৈর্য্য ও সংযম বড় কথা। দাদা কী করবেন তা নিয়ে কোনও তাড়াহুড়ো নেই।