
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে দেশের মাটিতেই রুশ প্রযুক্তির অত্যাধুনিক কালাশনিকভ একে-২০৩ রাইফেল তৈরি করবে ভারত| ৬ লাখ কালাশনিকভের জন্য চুক্তি হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে| প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অ্যাসল্ট কালাশনিকভের উৎপাদন শুরু হবে উত্তরপ্রদেশের কোরভার অস্ত্র কারখানায়|
সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে কালাশনিকভ রাইফেলের চুক্তি অন্তিম পর্যায়ে রয়েছে| অস্ত্র তৈরির লাইসেন্স চলে আসবে আর কিছুদিনের মধ্যেই| রুশ প্রযুক্তিতেই অ্যাসল্ট একে-২০৩ তৈরি হবে দেশের কারখানায়|

২০১৮ সালে এপ্রিল মাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের রাশিয়া সফরের সময় গোটা বিষয়টি বাস্তবায়িত হয় এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুসারে রুশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ দেশের অস্ত্র কারখানাতেই কালাশনিকভ রাইফেলের সর্বাধুনিক মডেল বানানোর অনুমতি পায় ভারত। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথমে রাশিয়া থেকে ২০ হাজার একে-২০৩ রাইফেল কেনা হবে। প্রতিটি রাইফেলের দাম ৮০ হাজার টাকা। আগামী দিনে এই রাইফেলই ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ানদের হাতে দেখা যাবে। বাকি রাইফেলগুলি ভারতেই তৈরি হবে| ভারতের অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের শীর্ষ কর্তারা রাশিয়ায় রুশ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে গোটা প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেন| রাশিয়ার বিশেষজ্ঞরা এ দেশের অস্ত্র কারখানাগুলি ঘুরে সিদ্ধান্ত নেন কোন কারখানায় কালাশনিকভের সর্বাধুনিক মডেল তৈরির পরিকাঠামো আছে| উত্তরপ্রদেশের করওয়া অর্ডন্যান্স প্রজেক্ট শেষ পর্যন্ত এই অস্ত্র তৈরির বরাত পায়।
একে সিরিজের মধ্যে বর্তমানে সবথেকে শক্তিশালী এই রাইফেল। রুশ স্পেশ্যাল ফোর্স এই রাইফেল ব্যবহার করে। একে-৪৭ এর মতোই এই রাইফেলের চেম্বারেও ৭.৬২ x ৩৯ মিলিমিটার অ্যামুনেশন ফায়ার করার ক্ষমতা রয়েছে। প্রায় দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় সেনায় ব্যবহার করা ৫.৫৬ x ৪৫ মিলিমিটার অ্যামুনেশন ক্ষমতার ইনস্যাস (ইন্ডিয়ান স্মল আর্মস সিস্টেম) রাইফেলের পরিবর্তে এবার এই রাইফেল ব্যবহার করা হবে।
এই রাইফেলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ‘এরগোনোমিক’ পিস্তল ট্রিগার, যা অন্যান্য রাইফেলের থেকেও আধুনিক| এই রাইফেলের সঙ্গে দু’টি স্ট্যান্ড যুক্ত করা যায়, যাতে টেলিস্কোপ থেকে শুরু করে অন্য সাহায্যকারী যন্ত্র ওই রাইফেলের সঙ্গে যুক্ত করা যায়।
একে-২০৩ রাইফেলের সুবিধা হল এটি যে চালাচ্ছে তার উচ্চতা অনুযায়ী বদল করা যায়। এই রাইফেলের সেফটি মেকানিজমও অন্য রাইফেলের থেকে আলাদা। নাইট ভিশনেও এই রাইফেল খুবই উপকারী। রাইফেলের ওজন প্রায় ৪ কিলোগ্রাম ২০০ গ্রাম। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৯০০ মিলিমিটার। প্রতি মিনিটে ওই রাইফেল থেকে ৬০০ রাউন্ড গুলি চালানো সম্ভব। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে এই রাইফেল তৈরি হলে, পুরনো আমলের একে সিরিজের রাইফেল বাতিল করে সেনাবাহিনীর হাতে নতুন প্রযুক্তির এই অস্ত্র তুলে দেওয়া সম্ভব হবে|