
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনার পরেই চিনে আতঙ্ক বাড়িয়েছিল আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু। শুয়োরের ফার্মগুলিতে মৃত্যু হয়েছিল হাজার হাজার শুয়োরের। এবার সেই আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসেরই আরও দু’টি নতুন স্ট্রেনের খোঁজ মিলল চিনে! বিশেষজ্ঞদের অনুমান, নিষিদ্ধ কোনো ভ্যাকসিন ব্যবহার করার কারণেই এই নতুন স্ট্রেনগুলির সংক্রমণ ছড়িয়েছে চিনে।চিনের চতুর্থ বৃহত্তম শুয়োর ফার্ম ‘নিউ হোপ লিউই’-র তরফে জানানো হয়েছে, নতুন দু’টি স্ট্রেনের সংক্রমণে হাজারের বেশি শুয়োর নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লুয়ের যে ভাইরাস স্ট্রেন, তাতে যে জিনগুলি রয়েছে, নতুন দু’টি স্ট্রেনে সেই জিনগুলির মধ্যে দু’টি অনুপস্থিত। এই নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণে শুয়োরের মৃত্যুও কম। এই সংক্রমণের ফলে শুয়োর উতপাদন কম হচ্ছে, সদ্যোজাত শুয়োরগুলির স্বাস্থ্য খারাপ হচ্ছে। কিন্তু এর আগে যেমন মড়ক লেগেছিল, তেমনটা এখনও হয়নি। সংক্রমিত শুয়োরগুলিকে আলাদা রাখা হচ্ছে ফার্মগুলিতে।
বেজিংয়ের পশুরোগ বিশেষজ্ঞ ওয়ায়নে জনসন জানিয়েছেন, আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লুয়ের ভাইরাস মডিফায়েড হয়েই এই নতুন স্ট্রেন তৈরি হয়েছে। এমজিএফ ৩৬০ এবং সিডি টু ভি– এই জিন দুটি নতুন স্ট্রেনে অনুপস্থিত। গবেষণা বলছে, এর ফলে এই নতুন স্ট্রেন শুয়োরগুলির দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। তবে এটি যে কোনও সময় ফোর নিজেকে মিউটেট করে কয়েক গুণ বেশি ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
এই অবস্থায় শুয়োরগুলিকে বাঁচানোর জন্য ও বিক্রি করার জন্য উদগ্রীব ব্যবসায়ীরা। ২০১৮-১৯ সালের আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লুয়ের কারণে কয়েক হাজার কোটি টাকার পর্ক-ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল চিনে। এবার তাই অনেকেই আগাম টিকা দিচ্ছেন শুয়োরগুলিকে। কিন্তু আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লুয়ের কোনও অনুমোদিত টিকা এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। যেটি রয়েছে, সেটির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। কারণ সেই টিকার কারণে মানুষের দেহে ক্ষতি হয় বলে জানা গেছে গবেষণায়। এই ভ্যাকসিন ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন সেই বাতিল টিকার কারণেই নতুন স্ট্রেন আক্রমণ করেছে শুয়োরগুলিকে। এই স্ট্রেন যে ‘ম্যান মেড’, প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হয়নি, তা একরকম স্পষ্ট হয়েছে গবেষণায়। তবে কারা কেন এই বেআইনি ভাইরাস ব্যবহার করছে, কীভাবেই বা তা হাতে পাচ্ছে, এ বিষয়ে এখনও চিনের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।