
দ্য ওয়াল ব্যুরো : চারটি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা ভোট শেষ হওয়ার পরে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবেন কংগ্রেসে। শুক্রবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এমনই স্থির হয়েছে। নতুন সভাপতি নির্বাচন নিয়ে এদিন বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন কংগ্রেস নেতারা। তখন প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন, এই বিতর্ক বরাবরের মতো শেষ করা দরকার।
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে কংগ্রেসের মুখপাত্র কে সি বেণুগোপাল বলেন, ২০২১ সালের জুন মাসে নতুন সভাপতি কংগ্রেসের দায়িত্ব নেবেন। একটি সূত্রে জানা যায়, নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবেন ১৫ থেকে ৩০ মে-র মধ্যে।
এদিন ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে প্রবীণ নেতা পি চিদম্বরম, গুলাম নবি আজাদ, মুকুল ওয়াসনিক ও আনন্দ শর্মা দাবি তোলেন, অবিলম্বে দলে সাংগঠনিক নির্বাচন করতে হবে।
উনিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন রাহুল গান্ধী। নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রচারে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী এক করে ফেলেছিলেন তিনি। তাঁকে প্রচারে সাহায্য করার জন্য রাজনীতির আঙিনায় নামেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও। লোকসভার আগে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটকের বিধানসভার ফলে আশা জেগেছিল কংগ্রেসের মধ্যে। মনে করা হয়েছিল, রাহুলের নেতৃত্বে বিজেপিকে বেগ দেবে কংগ্রেস।

অথচ লোকসভার ফল বেরাতে দেখা যায় উলটপুরান। আরও বেশি আসন নিয়ে ফের ক্ষমতায় আসে নরেন্দ্র মোদী সরকার। অন্যদিকে নিজের কেন্দ্র অমেঠীতেও হারতে হয় রাহুলকে। তারপরেই সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন রাহুল। তিনি দাবি করেন, গান্ধী পরিবারের বাইরে কাউকে এই পদ দেওয়া হোক। কিন্তু ফের কংগ্রেস নেতৃত্বের অনুরোধে দায়িত্ব নেন ৭৩ বছরের সনিয়া।
গত এক বছরে সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বেও বারবার ভাঙন ধরা পড়েছে কংগ্রেসে। মধ্যপ্রদেশে দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন জ্যোতিরাধিত্য সিন্ধিয়া। তার ফলে সরকার পড়ে গিয়েছে। রাজস্থানেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। বিদ্রোহ করেছিলেন আর এক তরুণ নেতা শচীন পাইলট। নিজের ক্ষুরধার বুদ্ধিতে সরকার বাঁচিয়েছেন অশোক গেহলট। বারবার এই ধরনের ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, কংগ্রেসের যুব নেতারা কি তবে সনিয়া গান্ধীর উপর ভরসা রাখতে পারছেন না। নইলে বারবার কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। আর যেখানে সিন্ধিয়া ও পাইলট দু’জনেই রাহুলের খুব কাছের লোক ছিলেন, সেখানে এই প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক।
গত অগাস্টে সনিয়া গান্ধীকে একটি চিঠি লেখেন দলের প্রায় দু’ডজন প্রবীণ নেতা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, নেতৃত্ব নিয়ে দলের অন্দরেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। এভাবে চললে দলের আরও ক্ষতি। দলের একাংশ চান, রাহুলই ফের সভাপতি হোন। এর মধ্যে রাহুলকে একাধিকবার প্রশ্ন করা হয়েছে, আপনিই কি ফের দলের সভাপতি হচ্ছেন। কিন্তু তিনি প্রতিবারই জানিয়েছেন, তার কোনও সম্ভাবনা নেই।