
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাসপাতাল-নার্সিংহোমের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোবট-গাড়িতে করে খাবার পৌঁছে দেওয়ার প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে গুয়াহাটির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট টেকনোলজির নতুন চমক ইউভিসি লেড-যুক্ত স্যানিটাইজেশন ডিভাইস (UVC Led-Based Device) । কোনও মসৃণ পদার্থ বা জিনিসই হোক অথবা কোনও বড় এলাকা, এই ডিভাইসের সাহায্যে খুব দ্রুত স্যানিটাইজ করা যাবে।
আইআইটি গুয়াহাটির ডিরেক্টর টিজি সীতারাম বলেছেন, সংক্রামক ভাইরাস বা ওই জাতীয় প্যাথোজেন ছড়িয়ে আছে এমন কোনও জায়গা বা পদার্থ জীবাণুমুক্ত করার জন্য ইউভিসি ডিভাইস বরাবরই কাজে লাগে। সেই প্রযুক্তিকেই নতুন ভাবে সাজিয়ে এই স্যানিটাইজার ডিভাইস তৈরি হয়েছে। ছোট জায়গা হোক বা বড় এলাকা, এই ডিভাইস কাজ করবে খুব দ্রুত। একটা নির্দিষ্ট মাত্রার ডোজ প্রয়োগ করে মাত্র ৩০ সেকেন্ডে জীবাণুমুক্ত করার ক্ষমতা এই ডিভাইসের আছে।
গুয়াহাটি আইআইটির এই প্রজেক্টে রয়েছেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক, গবেষক ডক্টর সেন্থিলমুরুগান সুব্বিয়া। এই প্রজেক্টে আইআইটির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বেঙ্গালুরুর একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা।
@IITGuwahati develops low-cost UVC LED system to disinfect areas amid #COVID19https://t.co/y7UIuWwlhm
— IIT Guwahati (@IITGuwahati) April 7, 2020
ডিরেক্টর টিজি সীতারাম বলেছেন, ”সরকারের নির্দেশেই বানানো হয়েছে এমন ডিভাইস। হাসপাতাল চত্বর, আইসোলেশন ওয়ার্ড, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, এমনকি কোনও বড় এলাকা, দোকানবাজার দ্রুত স্যানিটাইজ করার জন্য এমন একটি ডিভাইস বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।” তিনি বলেন, ৩ডি টেকনোলজির উপর ভিত্তি করে এই ইউভিসি ডিভাইসের প্রাথমিক প্রোটোটাইপ তৈরি হয়ে গেছে। এখন ম্যানুয়ালি কাজ করবে এই ডিভাইস। তবে এই ডিভাইসকে চালানো জন্য রোবট তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে।
এই গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক সেন্থিলমুরুগান সুব্বিয়া বলেছেন। তিনি বলেছেন, ঘরের মেঝে, দেওয়াল, যে কোনও মসৃণ বা অমসৃণ পদার্থের উপরে এই ডিভাইস দিয়ে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় ডোজ দিলে মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই সেই জায়গা জীবাণুমুক্ত হবে। আরও একটি বৈশিষ্ট্য আছে এই ডিভাইসের। কোনও জীবন্ত জিনিসের নড়াচড়া এই ডিভাইস শনাক্ত করতে পারে। তাই যদি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে চালানো যায় তাহলে স্যানিটাইজ করার সময় মানুষের শরীর এড়িয়ে চলবে এই ডিভাইস।
আইআইটি গুয়াহাটির তরফে জানানো হয়েছে,এমন ৫০০০ ইউভিসি ডিভাইস তৈরির কাজ চলছে। সরকারি অনুমোদন পেলে আরও বেশি সংখ্যক এমন ডিভাইস তৈরি শুরু হবে। খুব কম খরচে এমন আলট্রাভায়োলেট স্যানিটাইজিং ডিভাইস তৈরির কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
বিশেষ অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল কোটিং দিয়ে পিপিই তৈরির কাজ চলছে আইআইটি গুয়াহাটিতে। তাছাড়া ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ফেস-মাস্ক, ফেস-শিল্ড, হেডগিয়ার তৈরির কাজও চলছে। আইসোলেশন ওয়ার্ডে নার্সদের যাতায়াত কমাতে রোবট বানিয়েছে গুয়াহাটি আইআইটির মেকানিক্যাল ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পড়ুয়ারা। আইআইটির পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসের হাসপাতালে রোবটের মহড়া চলছে। সামনের সপ্তাহেই তা পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে বলে তাঁদের আশা। দু’টি রোবট দু’রকম কাজ করবে। একটি পৌঁছে দেবে খাবার এবং ওষুধ। অন্যটির কাজ হবে আইসোলেশন ওয়ার্ড পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। পরিষ্কার করে দেবে আইসোলেশন ওয়ার্ডের ময়লা।