
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত ১৪ জুন বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই এই ঘটনার দায়িত্ব ভার রয়েছে মুম্বই পুলিশের হাতে। যদিও সুশান্তের পরিবার থেকে শুরু করে অনেকেই এই ঘটনার জন্য সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন, তারপরেও দেশের শীর্ষ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এই অবস্থায় মুম্বই পুলিশের উপর ভরসা রাখার জন্য সুশান্তের ভক্তদের আর্জি জানালেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।
বেশ কিছুদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং হয়েছে সিবিআই ফর সুশান্ত হ্যাশট্যাগ। শুধু সুশান্তের ভক্তরা নন, তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব, অনেক সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দাবি করেছেন এই তদন্তের ভার সিবিআইয়ের উপর দেওয়া হোক। কিন্তু মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে বারবার বলা হয়েছে মুম্বই পুলিশের ক্ষমতা রয়েছে এই তদন্তভার নেওয়ার।
উদ্ধব ঠাকরে বলেন, মানুষের উচিত এই তদন্তে মুম্বই পুলিশের উপর ভরসা রাখা। তিনি বলেন, “মহারাষ্ট্র পুলিশ ও মুম্বই পুলিশ করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ছে। তাঁরা কোভিড যোদ্ধা। তাই তাঁদের বিশ্বাস না করার মানে হল তাঁদের অপমান করা। আমি সুশান্তের ভক্তদের বলতে চাই মুম্বই পুলিশের উপর ভরসা রাখুন। সেইসঙ্গে আপনাদের কাছে যা তথ্য রয়েছে পুলিশকে জানান। যদি এই তদন্তের সমাধান না হয় তাহলে পুলিশের সমালোচনা করবেন আপনারা।”
শুধু তাই নয় মুম্বই পুলিশের সমালোচনা করার জন্য বিরোধী দলনেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের সমালোচনা করেন ঠাকরে। তিনি বলেন, বিজেপির এই নেতা মুম্বই পুলিশের উপর ভরসা রাখছেন না। পাঁচ বছর এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকার পরেও সন্দেহ করছেন তিনি।
এদিকে কয়েক দিন আগে সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী ও আরও ৫ জনের বিরুদ্ধে পটনার রাজেন্দ্র নগর পুলিশ স্টেশনে একটি ছ’পাতার এফআইআর দায়ের করেন সুশান্তের বাবা কৃষ্ণ কুমার সিং। সেই এফআইআরে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬, ৩৪১, ৩৪২, ৩৮০, ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়, যার মধ্যে আত্মহত্যায় প্ররোচনা, চুরি, বিশ্বাসভঙ্গ, বেআইনিভাবে সম্পত্তি লিখিয়ে নেওয়া প্রভৃতি ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে গত চারদিন ধরে মুম্বইয়ে রয়েছেন বিহার পুলিশের চার আধিকারিকের একটি দল।
সুশান্তের বাবার করা অভিযোগের ভিত্তিতে মূলত আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। তাতে ইডির হাতে এমন অনেক প্রমাণ মিলেছে যাতে বোঝা যাচ্ছে, টাকার বেআইনি লেনদেন করা হয়েছে। এই লেনদেনের সঙ্গে ২৮ বছর বয়সী রিয়া ও তাঁর পরিবারের অন্যরা যুক্ত বলেই সন্দেহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। তারপরেই ১৫ কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার মামলা দায়ের করেছে ইডি।
এদিকে ক্রমাগত তাঁর বিরুদ্ধে উঠতে থাকা অভিযোগের জবাবে শুক্রবার একটি ভিডিও বার্তায় রিয়া চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দেশের আইন ব্যবস্থার উপর তাঁর ভরসা রয়েছে। সত্য ঠিক বেরিয়ে আসবে।