
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়ই বলেন, হায়দরাবাদ থেকে একটা দালাল পার্টিকে ধরে এনেছে বিজেপি। ওদের একদম বিশ্বাস করবেন না।
সম্প্রতি জলপাইগুড়ির জনসভায় দাঁড়িয়ে দিদি এও বলেছিলেন, “বিজেপি হিন্দু ভোট নিয়ে চলে যাবে, ওরা (পড়ুন আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মিম) মুসলমান ভোট নিয়ে চলে যাবে। আমরা কি কাঁচকলা খাব?
বিজেপির বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, ওয়াইসির দল অল ইন্ডিয়া মজলিস এ ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের সঙ্গে আসলে বিজেপির গোপন বোঝাপড়া রয়েছে। ওরা সংখ্যালঘু ভোট কেটে বিজেপির জয়ের পথকে চওড়া করে দেয়। বিরোধীদের সেই অভিযোগেই কার্যত সিলমোহর দিয়ে দিলেন উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের সাংসদ সাক্ষী মহারাজ।
সামনেই উত্তরপ্রদেশে পঞ্চায়েত ভোট রয়েছে। সেইসঙ্গে বাংলাতেও মিমের পা রাখা নিয়ে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলের আভাস পাচ্ছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে মহারাজের মন্তব্য, “এটা ঈশ্বরের কৃপা। ঈশ্বর ওঁকে শক্তি দিন। উনি বিহারে আমাদের সাহায্য করেছেন, আর এখন উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত ও বাংলার বিধানসভা ভোটে আমাদের সাহায্য করবেন।”
বিহার ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করে অবশ্য দেখা গিয়েছে, মিম কোথাও ভোট কেটে কারও যাত্রাভঙ্গ করতে পারেনি। যে পাঁচ আসনে তারা জিতেছে, সেখানে তাদের প্রার্থী ছিলেন মজবুত সংখ্যালঘু নেতা। এবং সেই সব আসনে তারা ভাল ব্যবধানে জিতেছেন। তা ছাড়া এও দেখা গিয়েছে, যে পাঁচ আসনে মিম জিতেছে সেখানে মুসলিমরা এক প্রকার সংখ্যাগুরু।
বাংলায় যে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক তৃণমূলের অন্যতম ভরসার জায়গা তার মধ্যে কোনও লুকোছাপা বিশেষ নেই। উনিশের লোকসভা ভোটের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বলেছিলেন, “এবারের ভোটটা টোটাল হিন্দু-মুসলমান হয়েছে।” সেইসঙ্গে দিদি আরও বলেছিলেন, “যে গরু দুধ দেয় তার লাথিও খেতে পারি।”
এখন দুটো প্রশ্ন রয়েছে। এক, তা হলে কি বাংলায় মিমের কোনও প্রভাব খাটবে না। এবং দুই, সাক্ষী মহারাজ এটা কেন বললেন?
পর্যবেক্ষকদের মতে, বিহারের অভিজ্ঞতা থেকে ওয়াইসিও শিক্ষা নিয়েছেন। ক’দিন আগে ফুরফুরা শরিফে এসে তিনি বলেছেন, বাংলায় পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির নেতৃত্বেই তাঁর দল লড়বে। অর্থাৎ বাঙালি মুসলমান মজবুত নেতৃত্বকে তিনি সামনে রাখতে চাইছেন। যাঁর বাংলার সংখ্যালঘু তথা মুসলিম যুবক, যুবতী নতুন প্রজন্মের কাছে আবেদন রয়েছে এবং তাঁদের কাছে জনপ্রিয়। মিম থাকবে তাঁর পিছনে।
ওদিকে সাক্ষী মহারাজ যে কথা বলেছেন, তার অর্থ সাদামাটা। দলের গোপন ফর্মুলা তিনি হাটখোলা করে দেবেন তাঁকে এতটাও বোকা ভাবার কারণ নেই। ওয়াইসি ইদানীং কেবলই বলছেন, তিনি উত্তরপ্রদেশে শাখা প্রশাখা ছড়াবেন। নিয়ম করে আদিত্যনাথের সমালোচনা করছেন তিনি। সেই কারণেই ওয়াইসিকে খোঁচা দিতে গিয়ে সাক্ষী মহারাজ বলেছেন, ইশ্বরের কৃপা যে তোমরা আসছ। তোমরা এলে আমাদেরই লাভ।