
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাসপাতালের মর্গে পড়ে রয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় শিশুর দেহ। সূত্রের খবর, চার-পাঁচদিন ধরে মর্গের ফ্রিজারেই ছিল শিশুর দেহ। এদিকে কাউকে জানাতেই নাকি ভুলে গিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খোদ সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এবার এমন গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সূত্রের খবর, এই ঘটনা মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের। সেখানকার সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল মহারাজা যশবন্তরাও হাসপাতালে এই কাণ্ড ঘটেছে।
সূত্রের খবর, গত জুলাই মাসে মধ্যপ্রদেশই আলিরাজপুর জেলায় এই শিশুর হদিশ পান এক সমাজকর্মী। অসুস্থ শিশুটি তখন একা একাই রাস্তায় ঘুরছিল। নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা করেও সফল হননি ওই সমাজকর্মী। এরপর ইন্দোরের ওই হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করেন ওই সমাজকর্মী। স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে এ ব্যাপারে জানানোও হয়। জানা গিয়েছে, ১১ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় এই শিশুর। যদিও তার মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়।
শিশুটির মৃত্যুর পরের দিন অর্থাৎ ১২ সেপ্টেম্বর মর্গের ফ্রিজারে রাখা হয় শিশুর দেহ। এদিকে শিশুর মৃত্যুর ব্যাপারে কাউকেই কিছু জানানো হয়নি। মর্গের কর্মী তথা হাসপাতালে কর্মীরা নাকি বেমালুম ভুলেই গিয়েছিলেন এই ঘটনা। এমনটাই দাবি করেছেন তাঁরা। অসাবধানতায় এমন একটা তথ্য, এক শিশুর মৃত্যুর কথা ভুলে যাওয়াতেই নাকি কাউকে কিছু জানানো সম্ভব হয়নি। এরপর গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে পুলিশ কিয়স্কে যোগাযোগ করে শিশুটির হাল-হকিকত জানতে চান সিএমওএইচ। এরপর পুলিশের তরফে হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিশুর ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তখন টনক নড়ে তাদের।
শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু এবং পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ হেন অদ্ভুত আচরণ এবং গাফিলতি দেখে সন্দেহ দানা বাঁধছে। সাধারণ অজ্ঞাতপরিচয় লাশের ক্ষেত্রে ময়নাতদন্তের সময় পুলিশের উপস্থিতি আবশ্যক। তবে এক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়েছে কিনা, কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আদৌ শিশুটির ময়নাতদন্ত করেছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে কিছু জানা যায়নি। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় নথিপত্র এখনও তাদের কাছে এসে পৌঁছয়নি। ফলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারছে না তারা। গোটা ঘটনায় পুলিশ কমিশনারের দফতরে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ইন্দোরের অ্যাডিশনাল পুলিশ কমিশনার রজনী সিং।
তবে এটাই প্রথম নয়। এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে সদ্যই আরও একবার এমন অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার ইন্দোরের এমওয়াই হাসপাতালের মর্গ থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক ব্যক্তির পচাগলা দেহ। হাসপাতালের তরফে বলা হয়েছিল প্রায় ১১ দিন ধরে মর্গের ভিতর স্ট্রেচারের উপরেই শোয়ানো ছিল দেহ। ফ্রিজারেও রাখা হয়নি। ফলে দেহে পচন ধরে গিয়েছিল। ওই ব্যক্তিরও নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তাই তাঁর শেষকৃত্যের জন্য একটি এনজিও-র হাতে দেহ তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাহলে কেন ওই ব্যক্তির দেহ নিয়ে এত গাফিলতি হল সে ব্যাপারে কোনও যুক্তিযুক্ত জবাব দিতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে জুলাই মাসেও ইন্দোরের এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে মৃতের পরিবারকে ভুল দেহ দেওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছিল। সে বার নিজেদের ছেলের বদলে অন্য একজনের সৎকার করেছিল একটি পরিবার। সেক্ষেত্রে দু’জন মৃত যুবকেরই নাম ছিল এক। বারবার গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় এখন বিভিন্ন মহলের নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে ইন্দোরের মহারাজা যশবন্তরাও হাসপাতাল।