
আইডি বিস্ফোরণে হাতের আঙুল খুইয়ে নমিনেশন দাখিল করলেন জাকির হোসেন
দ্য ওয়াল ব্যুরো, মুর্শিদাবাদ: নিমতিতা স্টেশনের কাছে আইডি বিস্ফোরণে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। সামান্য সুস্থ হয়ে মঙ্গলবার জঙ্গিপুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে নমিনেশন ফাইল করলেন রাজ্যে শ্রমদফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। বিস্ফোরণে তাঁর হাতে আঙুল খুইয়ে ফেলেছেন। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে লড়ার মনবল খোয়াননি। সেই হাতে টিপসই দিয়ে তাঁর মনোনয়নপত্র মহকুমা শাসকের কাছে জমা দেন। ৮ সদস্যের মেডিকেল টিমের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে স্ট্রেচারে শুয়ে কোনরকমে জঙ্গিপুর মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে আসেন মন্ত্রী জাকির।
এতদিন পর প্রকাশ্যে এসে মৃদু হেসে তিনি বলেন,” আমার সঙ্গে ভোটে লড়াই করার মতো কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। ডান-বাম, বিজেপি, কোন পক্ষের নেই। আমি জিতবো। মানুষ জেতাবে এটা বিশ্বাস আমার”।
এই দিন তাঁর শারীরিক অবস্থা থেকে শুরু করে তাঁর ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্য বিস্তারিত আকারে জমা দেন জাকির সাহেব। সেগুলিকে খুঁটিয়ে দেখার জন্য বিশেষ বিশেষজ্ঞ টিমও হাজির ছিল।
জাকির হোসেন মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসায় জঙ্গিপুরে ছিল উত্তেজনা। শুধু তাই নয়, তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাইরে উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ তথা জেলা সভাপতি আবু তাহের খান এবং জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ খলিলুর রহমান। সঙ্গে ছিল অগণিত সমর্থকের ভিড়।
তিনি বাইরে বেরলে দেখা যায়, তাঁর গোটা শরীরে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। দেহের বিভিন্ন অংশে ব্যাণ্ডেজ। হাতের আঙুল ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়ার ফলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই হাত নেড়েই তিনি কর্মী-সমর্থকদের শুভেচ্ছা জানালেন।
দলীয় সূত্রে খবর অনুযায়ী, টানা দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আক্রান্ত মন্ত্রী জাকির। কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে বিশিষ্ট চিকিৎসকদের নজরদারিতে চলছে তাঁর চিকিৎসা। একটি পা ও হাতের বিভিন্ন অংশে ক্ষতি হয়েছে ব্যাপকভাবে। দুটি আঙ্গুলের মাঝের অংশ পুড়ে যাওয়ায় তা বাদ পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত আঙ্গুলগুলিতে প্লাস্টিক সার্জারির করে হাত নিখুঁত করার চেষ্টাও চলছে। তা সম্পূর্ণ সুস্থ হতে এখনও কয়েক মাস সময় লাগবে বলেই চিকিৎসকরা জানান। মঙ্গলবার নমিনেশন ফাইল করতেই চিকিৎসকদের অনুমতি নিয়ে কয়েক দিনের জন্য নিজের বাড়িতে ফিরেছেন মন্ত্রী।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে নিমতিতা স্টেশনে আইডি বিস্ফোরণকাণ্ডে জখম হন শ্রমদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। গুরুতর জখম হন কমপক্ষে ২৪ জন। তড়িঘড়ি তাঁকে কলকাতায় আনা হয়।
জাকির সাহেবের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সালাম শেখ বলেন, ”এলাকায় দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষ ভালোবাসেন। তাই উনার জয় নিশ্চিত এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।” এদিকে জাকিরের হয়ে প্রচার করতে দলীয় নেতৃত্বকে সাহায্য করছেন তাঁর ভাগ্নে রনি বিশ্বাস।