
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমেরিকা, ব্রিটেন, দুবাই, সিঙ্গাপুর সহ একাধিক দেশে টিকা দিচ্ছে ফাইজার-বায়োএনটেক। ভারতেও জরুরি ভিত্তিতে টিকাকরণের অনুমতি চেয়েছিল ফাইজার। তবে সে অনুমতি এখনই দেওয়া হয়নি। প্রথমত, খুব ঠান্ডায় টিকা সংরক্ষণের অসুবিধা। আর দ্বিতীয়ত, ফাইজারের টিকার কিছু জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ফাইজারের টিকার আগে ট্রায়াল হোক দেশে। সেরাম ইনস্টিটিউট, ভারত বায়োটেক, জাইদাস ক্যাডিলার টিকার মতো সুরক্ষা ও নিরাপত্তা যাচাই করেই ফাইজারকে টিকাকরণের অনুমতি দেওয়া হবে।
ডিসেম্বরের শুরুতেই ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছে ব্রিটেন। তারপর আমেরিকা, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও সেই ভ্যাকসিন অনুমোদন করেছে। জরুরি ভিত্তিতে ফাইজারের ভ্যাকসিন অনুমোদন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। এর ফলে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে সেই ভ্যাকসিন পাঠানো যাবে। হু জানিয়েছে, তারা ফাইজারের ভ্যাকসিন অনুমোদন করার ফলে বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সুবিধা হবে। তারাও ওই ভ্যাকসিন অনুমোদন ও আমদানি করতে পারবে। ইউনিসেফ ও প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশনের মতো সংস্থাও এবার দ্রুত ওই ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে বিভিন্ন দেশে পাঠাতে পারবে।
গত অগস্টে প্রথম ফাইজারের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছিল ভারতের কয়েকটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির। তবে ওই পর্যন্তই। বিদেশ থেকে টিকা নিয়ে আসতে হলে আগে তার ট্রায়াল করা জরুরি। টিকার ডোজ কেমন প্রভাব ফেলছে স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে তা জানার পরেই ছাড়পত্র দেয় ভ্যাকসিন রেগুলেটরি কমিটি। সে জন্য টিকার সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্টও জমা করতে হয়। যেমন, রাশিয়ার স্পুটনিক টিকার ট্রায়াল শুরু করেছে হায়দরাবাদের ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরি। এই টিকার ট্রায়াল সফল হলে তবেই সার্বিকভাবে প্রয়োগের অনুমতি দেওয়া হবে।
ফাইজারের টিকার সংরক্ষণের নিয়মও ভাবাচ্ছে। এই টিকা সংরক্ষণের জন্য মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন। টিকা বিমানে চাপিয়ে নিয়ে যেতে হলেও এই ঠান্ডাতেই সংরক্ষণ করে নিয়ে যেতে হবে। সাধারণত যে কোনও ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৩৬-৪৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। কিন্তু ফাইজারের টিকা যেভাবে তৈরি হয়েছে তাতে টিকার উপাদান টাটকা রাখতে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি বা -৯৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে সংরক্ষণ করার প্রয়োজন হয়। এত কম তাপমাত্রা তৈরি করতে হলে কোল্ড স্টোরেজে উন্নত পরিকাঠামো থাকা দরকার। সে ব্যবস্থা এই মুহূর্তে ভারতে নেই। আর এত তাড়াতাড়ি দেশের সব রাজ্যে এমন কোল্ড-চেন তৈরি করা সম্ভবও নয়।
আগামী শনিবার থেকে টিকাকরণ শুরু হচ্ছে দেশে। সেরামের তৈরি কোভিশিল্ড টিকা ও ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টিকার কয়েক লক্ষ ডোজ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যে রাজ্যে। টিকাকরণ কেন্দ্রগুলিও প্রস্তুত। প্রথম ধাপে তিন কোটি স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়া হবে, এরপরে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মীরা টিকা পাবেন। পরের ধাপে প্রবীণ ও কোমর্বিডিটির রোগীদের টিকা দেওয়া হবে।