
জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য পাকিস্তান, রাষ্ট্রপুঞ্জে ইসলামাবাদকে তুলোধনা ভারতের
জম্মু-কাশ্মীরে লাগাতার নাশকতা, সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন, চিনের প্রোরোচনায় পাক সীমান্তে সেনা মোতায়েন থেকে আল কায়েদা জঙ্গি তথা ৯/১১-র মূল চক্রী ওসামা বিন লাদেনকে ‘শহিদ’ সম্বোধন করা--ইসলামাবাদের দিকে একের পর এক অভিযোগের আঙুল তুলে রণং দেহি মেজাজে আক্রমণ শানালেন সিংভি।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সন্ত্রাসবাদের ‘ভরকেন্দ্র’ হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। জঙ্গিদের নিরাপদে মাথা গোঁজার ঠিকানা। কতদিন আর মিথ্যা স্তোক বাক্য সত্যিটা আড়াল করবে পাকিস্তান, গোটা বিশ্বই জেনে গেছে পাকিস্তানই হল সন্ত্রাসের আঁতুরঘর। রাষ্ট্রপুঞ্জে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সম্মেলনে পাকিস্তানকে রীতিমতো ধুয়ে দিলেন ভারতের প্রতিনিধি মহাবীর সিংভি।
জম্মু-কাশ্মীরে লাগাতার নাশকতা, সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন, চিনের প্রোরোচনায় পাক সীমান্তে সেনা মোতায়েন থেকে আল কায়েদা জঙ্গি তথা ৯/১১-র মূল চক্রী ওসামা বিন লাদেনকে ‘শহিদ’ সম্বোধন করা–ইসলামাবাদের দিকে একের পর এক অভিযোগের আঙুল তুলে রণং দেহি মেজাজে আক্রমণ শানালেন সিংভি। ইমরান সরকারকে নিশানা করেই সিংভি বলেন, পাকিস্তানের উচিত মিথ্যার আশ্রয় ছেড়ে নিজের দেশের রোগ সারানো। পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসেন বীজ তৈরি হয়। অথচ সব খারাপকেই ভাল সাজিয়ে নিজেদের মহৎ প্রমাণ করার চেষ্টা করে পাকিস্তান। নাশকতাই তাদের শক্তি ও অস্ত্র।
“গোটা বিশ্ব এখন একসঙ্গে অতিমহামারীর মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, এই ভয়ানক স্বাস্থ্য সঙ্কটের সময় পাকিস্তান সীমান্ত চুক্তি ভেঙে সন্ত্রাসের ভয়ঙ্কর খেলায় মেতে উঠেছে। হিংসা ও অসহিষ্ণুতার বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে সারা বিশ্বে। ভিত্তিহীন, প্রমাণহীন, মিথ্যা অভিযোগের আঙুল তুলছে ভারতের দিকে,” সরাসরি পাকিস্তানকে বিঁধে বললেন সিংভি।
মরিয়া চেষ্টা চালিয়েও সন্ত্রাস-বিরোধী আর্থিক নজরদারি সংস্থা এফএটিএফের ধূসর তালিকা থেকে মুক্তি পায়নি পাকিস্তান। এবছর এফএটিএফের চূড়ান্ত পর্বের বৈঠকে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাতেই রাখা হয়। লস্কর-ই-তইবা অথবা জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিকে আর্থিক সাহায্য পুরোপুরি বন্ধ না করলে কালো তালিকায় পাঠানোর হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় পাকিস্তানকে। সেই প্রসঙ্গ তুলেই সিংভি বলেন, সন্ত্রাস প্রশ্নে সবসময়েই নিজেদের তত্ত্ব প্রমাণ করার চেষ্টা করে চলেছে পাকিস্তান। তারা দাবি করেছে, জঙ্গি দমনে নাকি কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেগুরে বালি। বরং জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। সিংঘি বলেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশ বন্ধ করার জন্য পাকিস্তানকে বলুক আন্তর্জাতিক মহল। পাকিস্তানের যে সব বিশেষ সন্ত্রাসবাদী অঞ্চল রয়েছে, সেগুলির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসে আর্থিক মদত দেওয়া বন্ধ করুক ইসলামাবাদ।
পাক সরকার যে বরাবরই সন্ত্রাস বরাবরই মদত দেয় এবং সন্ত্রাসকে কূটনীতির কাজে ব্যবহার করে, এ কথা বহুবার রাষ্ট্রপুঞ্জে বলেছে ভারত। কিন্তু তার পরেও সীমান্ত পারের সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি। সেই প্রসঙ্গ তুলে জাতীয় নিরাপত্তা পারিষদে সিংভি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের আসল সমস্যা হল সন্ত্রাস। পাকিস্তান সেই সন্ত্রাসের মদতদাতা। তাঁর দাবি, জইশ ও লস্কর সংগঠনের সাড়ে ছ’হাজারের বেশি জঙ্গি আফগানিস্তানে সক্রিয়। ২০০৮ সালে কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসে হামলা, ওই বছরই মুম্বইয়ে হামলা, ২০১৬-তে পাঠানকোটে হামলা, তাছাড়াও উরি ও পুলওয়ামার নাশকতার পিছনে পাক মদতপুষ্ট একাধিক সঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে। সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গিরা উপত্যকায় ঢুকে আসছে। তাদের অস্ত্র, অর্থ ও অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে পাকিস্তান। তাঁর আরও দাবি, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুরাও শান্তিতে নেই। সেখানকার হিন্দু, শিখ, খ্রিষ্টানদের উপর নানাভাবে জোরজবরদস্তি করা হয়। তাঁদের ধর্মীয় স্থানগুলোতেও হামলা চালানো হয়।